ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এক আবাসিক ছাত্রকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অনিয়মিত হওয়ার কথা বলে স্নাতকোত্তর শ্রেণির ওই ছাত্রকে কৌশলে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার হল থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন বলে অভিযোগ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইনামুল ইসলাম ওরফে নোমানের। তিনি বঙ্গবন্ধু হলের ৫০৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আবাসিক বৈধতা থাকলেও হলছাড়া হয়ে এখন আজিমপুরের একটি মেসে থাকছেন ইনামুল। তাঁর অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাইনুল ইসলাম ওরফে অনিকের কারণে তাঁকে হলছাড়া হতে হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে ইনামুল ইসলাম বলেন, ‘১৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমার বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি যে আমার সিট বাতিল করা হয়েছে। এর দু–এক দিন পর এক জুনিয়র শিক্ষার্থী বলেন যে আমার সিটে তাঁকে দেওয়া হয়েছে। আমি যেন তাঁকে সিটে উঠতে দিই এবং সিটসংক্রান্ত কোনো অভিযোগ থাকলে যেন অনিক ভাইয়ের (মাইনুল ইসলাম) সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি বলেন যে আমাকে হলে রাখা সম্ভব নয়।’
ইনামুল ইসলাম আরও বলেন, ‘তাঁকে (মাইনুল) আমি অনুরোধ করি যেন স্নাতকোত্তর শেষ হওয়া পর্যন্ত (আগামী চার মাস) আমাকে সিট থেকে না সরান এবং একই সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিই। কিন্তু তিনি তাঁর কথায় অটল রইলেন এবং আমাকে সিট ছেড়ে ফ্লোরিং (মেঝেতে থাকা) করতে বললেন। তবে কোন কক্ষে ফ্লোরিং করব, জানতে চাইলে তিনি বলেন যে আমি যেন আমার মতো ম্যানেজ করে থাকি, পরে তিনি ব্যবস্থা করবেন। তবে ফ্লোরিং করার পাশাপাশি সব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তিনি আমাকে বাধ্যতামূলকভাবে থাকার নির্দেশ দেন। আমি তাঁর কক্ষ থেকে চলে আসি। এর পরদিন সন্ধ্যায় এক জুনিয়র ছাত্র তাঁর বিছানাপত্র নিয়ে এসে আমাকে সিট ছেড়ে দিতে বলেন। পরে হল ছেড়ে আমি আজিমপুরের মেসে উঠেছি।’
তবে ইনামুলকে হলছাড়া করার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হলে আসন বণ্টন করে হল প্রশাসন। আমরা হলে আসন বণ্টনের সঙ্গে যুক্ত নই। ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তারা অনেক সময় আমাদের কাছে বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে আলোচনা করতে আসে। তখন আমরা যথাসাধ্য সহযোগিতা করি। তাঁকে কয়েক দিনের জন্য অন্য একটি সিটে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু সে চলে গেছে।’
এদিকে এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আকরাম হোসেন।