নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণ

শহীদ সদস্যদের স্মরণে শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডে উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়সংগৃহীত

সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হলো ১৮ বছর আগে নেত্রকোনায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত উদীচী সদস্যদের। শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডে উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

২০০৫ সালের এই দিনে নেত্রকোনায় উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রাণ হারান উদীচী নেত্রকোনা জেলা সংসদের তৎকালীন সহসাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলীসহ আটজন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ গানটি দলীয়ভাবে পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। নিহতদের স্মরণে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ, ঢাকা মহানগর সংসদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, এর আগেও ১৯৯৯ সালে উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলা করেছিল মুক্তচিন্তার বিরোধী অপশক্তি। সেই হামলাসহ এ দেশে এখন পর্যন্ত সংঘটিত বেশিরভাগ বোমা হামলারই সুষ্ঠু বিচার হয়নি।

বক্তারা বলেন, এ জন্যই এখনো স্বাধীন বাংলাদেশে আস্ফালন দেখায় অন্ধকারের শক্তি। তবে যত হামলাই আসুক অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদমুক্ত ও সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে উদীচীকে বিচ্যুত করা যাবে না।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি প্রবীর সরদার, সিপিবি নেতা সাজ্জাদ জহির চন্দন, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এবং ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফ নূরে কথায় উঠে আসে ২০০৫ সালে নেত্রকোনায় হামলার ঘটনার বর্ণনা।

তাঁরা বলেন, ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর সকালে নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয় লাগোয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন শতদল গোষ্ঠীর কার্যালয়ে একটি বোমা পড়ে থাকতে দেখে এক পথশিশু। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি খাজা হায়দার হোসেন এবং সুদীপ্তা পাল শেলীসহ উদীচীর নেতৃবৃন্দও ভিড় করেন ঘটনাস্থলে।

ঘণ্টাখানেক পর সাইকেল আরোহী এক যুবক নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে উদীচী নেতৃবৃন্দের কাছাকাছি পৌঁছেই তার সাইকেলে বহন করা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান খাজা হায়দার হোসেনসহ কয়েকজন। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন অন্তত ৬০ জন। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মারা যান সুদীপ্তা পাল শেলী।