গণহত্যার ছবি ফুটিয়ে তুলল খুদে আঁকিয়েরা

পুরস্কারপ্রাপ্তদের সঙ্গে আয়োজক ও বিচারকমণ্ডলীর সদস্যরা
ছবি: প্রথম আলো

মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়ের মাসের প্রথম দিনের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে উঠেছিল খুদে আঁকিয়েদের প্রাণবন্ত সমাগমে। রং-তুলি–পেনসিল দিয়ে তারা ফুটিয়ে তুলেছিল গণহত্যার দৃশ্য।

আজ শুক্রবার সকালে শিশু-কিশোরদের এই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল ‘বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ও তাহেরা চৌধুরী স্মৃতি সংসদ’। কাইয়ুম চৌধুরীর নবম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)। আর তাঁর স্ত্রী শিল্পী তাহেরা চৌধুরীরও দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীও ছিল ১ নভেম্বরে। এই দুই বরেণ্য শিল্পী দম্পতির স্মৃতি জাগরুক রাখতেই তাঁদের নামে গঠিত স্মৃতি সংসদ শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন আয়োজন করে আসছে। আজকের আয়োজন ছিল এরই অংশ।

সকাল ১০টায় চারুকলা অনুষদে বয়সভিত্তিক চারটি, এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের একটি, এই পাঁচটি বিভাগে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ঢাকায় এখনো তেমন শীত পড়েনি। অভিভাবকদের সঙ্গে আসা শিশুরা অঙ্কন ও চিত্রণ বিভাগের নিচতলার বারান্দায় সারি দিয়ে বসে রং-তুলি-পেনসিল নিয়ে ছবি আঁকায় মেতে ওঠে।
বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ও তাহেরা চৌধুরী স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান মনি জানালেন, পারিবারিকভাবেই এই সংসদ গড়ে তোলা হয়েছে।

কাইয়ুম চৌধুরী লোকান্তরিত হয়েছেন ২০১৪ সালে। পরের বছর থেকেই স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে তাঁর জন্ম ও মৃত্যু দিনে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। নতুন প্রজন্ম যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে পারে, সে কারণে এবার আঁকার বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যা। এ বছর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদেরও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী জানুয়ারি মাসে বড়দের জন্য একটি উন্মুক্ত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।

প্রতিযোগিতার বিচারকমণ্ডলীতে ছিলেন প্রবীণ শিল্পী আবদুল মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা চিত্রশিল্পী অধ্যাপক আবুল বারক আলভী, শিল্পী মো. মনিরুজ্জামান ও শর্ব্বরী রায় চৌধুরী।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আবুল বারক আলভী খুদে আঁকিয়েদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘গণহত্যার ছবি আঁকতে গিয়ে তারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরেছে। আগামী দিনে তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দেশকে সুন্দর করে গড়ে তুলবে। পরে বিচারকমণ্ডলীর সদস্যরা বিজয়ীদের হাতে পদক, সনদ ও উপহার তুলে দেন।’