‘সাকরাইন’ আগামীকাল, পুরান ঢাকার অলিগলিতে ঘুড়ির পসরা

সাকরাইন উৎসবের আগে অলিগলিতে রঙিন ঘুড়ির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ১৩ জানুয়ারি, শাঁখারীবাজার, পুরান ঢাকাছবি: প্রথম আলো

প্রতিবছর পৌষসংক্রান্তিতে ‘সাকরাইন উৎসব’–এ মেতে ওঠেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। পৌষ মাসের শেষ দিনে নানা রঙের ঘুড়িতে ছেয়ে যায় পুরান ঢাকার আকাশ। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
আগামীকাল রোববার এ সাকরাইন উৎসব হবে। ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবের মূল আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো। তাই পুরান ঢাকার অলিগলিতে ঘুড়ি বেচাকেনায় ধুম পড়েছে।

সাকরাইনে ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পুরান ঢাকার বাড়িগুলোর ছাদ থেকে শুরু হয় ঘুড়ি ওড়ানো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ ছেয়ে যায় নানা রঙের ঘুড়িতে। আর সন্ধ্যার পর শুরু হয় আতশবাজি, আগুনের খেলা।

আজ শনিবার সকালে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, নারিন্দা, ওয়ারী, সূত্রাপুর ও শাঁখারীবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গায় ঘুড়ির অস্থায়ী দোকান বসেছে। স্থায়ী দোকানগুলো তো আছেই। এর পাশাপাশি অলিগলি ও প্রধান সড়কের পাশে ফুটপাতেও বিক্রেতারা নানা রঙের ঘুড়ির পসরা সাজিয়ে বসেছেন।  

একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এবার সাকরাইনের আগে ঘুড়ির বেচাকেনা বেশ ভালো। তাঁরা ভালো ব্যবসার আশা করছেন।

শাঁখারীবাজারের ঘুড়ি বিক্রেতা দিলীপ নাগ প্রথম আলোকে বলেন, গতবার সাকরাইনে তেমন ব্যবসা করতে পারিনি। এবার এখন পর্যন্ত মোটামুটি ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এ বছর ঘুড়ি, নাটাই ও সুতার দাম কিছুটা বেড়েছে।

আরও পড়ুন
দোকান থেকে পছন্দ অনুযায়ী ঘুড়ি বেছে নিচ্ছেন ক্রেতারা। ১৩ জানুয়ারি, শাঁখারীবাজার পুরান ঢাকা
ছবি: প্রথম আলো

বিক্রেতারা জানালেন, প্রতিবছরের মতো এবারও চশমাদার, কাউটাদার, পঙ্খিরাজ, প্রজাপতি, চক্ষুদার, বোয়াদার, পান, চ্যাপলা, নৌকা, ঈগল, সাদা ঘুড়ি, চারবোয়া, দুই বোয়া, টেক্কা, লাভ ঘুড়ি, মালাদার, দাবা ঘুড়ি, বাদুর, চিল, অ্যাংরি বার্ডসহ নানা নামের ঘুড়ি এসেছে। সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য সুতা ও নাটাই।

নানা ধরনের ঘুড়ির মধ্যে চশমাদার, চক্ষুদার, কাউটাদার, পঙ্খিরাজ, প্রজাপতি, ইগল, চার বোয়া, দুই বোয়া, টেক্কা, লাভ ঘুড়ি, মালাদার, দাবা ঘুড়ি, বাদুর, গোলচোখ ঘুড়ির চাহিদা বেশি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

শাঁখারীবাজারের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ ঘুড়ি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। বিদেশি ও নকশা করা ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায়। একেকটি নাটাই মানভেদে ১৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেল। মাঞ্জা দেওয়া সুতা মানভেদে ৬০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শাঁখারীবাজারের এক ঘুড়ি বিক্রিতো জানালেন, এ বছর ঘুড়ির দোকান আগের চেয়ে বেড়েছে। এবার ছোট-বড় মিলিয়ে ১২০টির মতো দোকান বসেছে।

লালবাগ থেকে চার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঘুড়ি কিনতে শাঁখারীবাজারে এসেছিলেন শরিফুল ইসলাম। পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিচ্ছিলেন তিনি। বললেন, ‘সাকরাইনের আগে প্রতিবার ঘুড়ি কিনতে এখানে আসি। একসঙ্গে নানা রকমের ঘুড়ি এখানে কিনতে পাওয়া যায়। আমরা প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকার চক্ষুধার, লাভ ও গোলচৌখ ঘুড়ি ও নাটাই কিনেছি।’


আরও পড়ুন