ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে হবে

শহীদদের স্মরণে শনিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘মুক্ত করো ভয়’ শীর্ষক এক সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যছবি : সংগৃহীত

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধরে রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে তা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্য নামের একটি সংগঠন।

সংগঠনটি শহীদদের স্মরণে শনিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘মুক্ত করো ভয়’ শীর্ষক এক সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে। সেখানেই তারা এ আহ্বান জানায়।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘বহু মানুষের রক্তের ত্যাগের বিনিময়ে আজকে আমরা এখানে দাঁড়াতে পেরেছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছি। আমরা একটা ভয়হীন সংস্কৃতিচর্চা চাই।’

অভ্যুত্থানের বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘জাতিসংঘের টিমের সঙ্গেও বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এসব বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এখন ভয় দূর হয়ে গেছে। তাই এখন সবার মনে সাহস ছড়িয়ে দিতে হবে। আগের সেই ভয়ের সংস্কৃতি আর ফিরে আসুক, তা আমরা চাই না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিগত দিনে স্বাধীন চেতনায় বিশ্বাসীদের এই শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্টদের অত্যাচারে নিপীড়িত হয়েছিল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিটি ব্যক্তি। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের অনুপ্রেরণা। তাই শহীদদের চেতনাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। নাটক-চলচ্চিত্র ও গানের মাধ্যমে আমাদের শহীদদের নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই বেঁচে থাকবে এই অভ্যুত্থান।’

আলোচনা সভায় আবৃত্তিশিল্পী নাসিম আহমেদ বলেন, ‘নতুন স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে এ রকম সাংস্কৃতিক বিকাশ পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনেক। আমাদের ওপর হাজারো মানুষের রক্তের দায় রয়েছে। আমাদের শহীদেরাই এই দেশকে নতুনভাবে নির্মাণ করেছে। তাঁরা দেশকে নতুন করে সাজাতে আমাদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। সবার প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, আমরা যেন তাদের আকাঙ্ক্ষিত দেশ গঠন করতে পারি।’

আবৃত্তিকার শারমিন ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের নির্বাহী সদস্য এস এম বিপাশ আনোয়ার। স্মৃতিকথা তুলে ধরেন নিহত গোলাম নাফিসের বাবা গোলাম রহমান। বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বায়ক আবৃত্তিশিল্পী মৃন্ময় মিজান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। আলোচনা সভা শেষে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের পরিবেশনায় গান, কবিতা, নাটক ও মূকাভিনয় পরিবেশিত হয়। এ সময় জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের বিশেষ তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।