দুই বছর পর ঢাকায় কুমারী পূজা

ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিনে কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

করোনা মহামারিতে উৎসবগুলোও ম্লান হয়ে পড়েছিল। ছোট আয়োজন, সতর্কতা, নিষেধাজ্ঞা মাথায় নিয়ে বাঙালি নিজ নিজ ধর্মের উৎসব পালন করে। এ বছর করোনা প্রকোপ তেমন নেই। উৎসবগুলোও রং ফিরে পাচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব দুর্গাপূজায় দুই বছর পর ভক্তরা এবার কুমারী মাতার দর্শন পেলেন।

আজ সোমবার রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে মহা অষ্টমীর দিনে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দুই বছর পর হওয়াতেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস একটু বেশি ছিল। রাজধানীর মগবাজার থেকে সকাল আটটাতেই সপরিবারে মিশনের উদ্দেশে বের হন শ্যামা সরকার।

৪০ মিনিটেই পৌঁছে যান। শ্যামা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগেভাগে এলে বসার জায়গা পাব এবং মা দুর্গাকে ভালোভাবে দেখা যায়। কিন্তু সবাই আগেই চলে আসে।’

সকাল থেকেই বৃষ্টি ছিল। সাড়ে নয়টার পর বৃষ্টির গতি বাড়তে থাকে। বৃষ্টি–কাদা উপেক্ষা করেই পূজাস্থলে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টায় পুষ্পাঞ্জলির পর বেলা ১১টায় শুরু হয় কুমারী পূজা। এবারের কুমারী হয় উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী দেবদ্রিতা চক্রবর্তী শ্রেষ্ঠা (৬)। এবার উমা নামে কুমারী পূজা হয়।

ভক্তরা উলুধ্বনি ও ঢাকের তালে কুমারী পূজায় শামিল হন। প্রায় ৪০ মিনিটি ধরে চলে এ পূজা। এরপর পুষ্পাঞ্জলি হয় এবং প্রসাদ বিতরণ হয়।

কুমারী পূজা করার কারণ হিসেবে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মহারাজ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, সব নারী ভগবতীর একেকটি রূপ। শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর বেশি প্রকাশ। কুমারীতে দেবীভাব আরোপ করে ঈশ্বরের আরাধনা করা হয়। এর মাধ্যমে সব নারী জাতিকে সম্মান জানানো হয়।

১৯০১ সালে ধর্মপ্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে কুমারী পূজার মাধ্যমে এর প্রচলন করেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এ পূজা চলে আসছে।