ফাঁকা রাজধানী, ঘরমুখী মানুষের ভিড় টার্মিনালে
ঈদুল আজহার ছুটি শুরুর আগে বুধবার ছিল শেষ কর্মদিবস। ওই দিন বিকেল থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেন ঘরমুখী মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাস টার্মিনালে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আর অনেকেই স্বস্তির জন্য ঢাকা ছাড়ছেন আজ শুক্রবার। এখন বাস টার্মিনালে ভিড় থাকলেও পাল্টে গেছে ব্যস্ততম রাজধানীর চিরচেনা দৃশ্য।
আজ সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে গণপরিবহন ছিল হাতে গোনা। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও ছিল কম। সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম হলেও যাঁরা ছিলেন, গণপরিবহন পেতে তাঁদের ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। আছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও।
রাজধানীর মহাখালীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন জান্নাতুল ফেরদৌস। ঈদের ছুটিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী যাচ্ছেন তিনি। গাড়ির জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কথা জানালেন জান্নাতুল। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, গাড়ি পাচ্ছি না। আবার এক-দুটি গাড়ি পেলেও সেখানে অনেক মানুষের ভিড়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। ভাড়াও দ্বিগুণের মতো চাচ্ছে।’
অবশ্য বাস টার্মিনালে ছিল মানুষের ভিড়। উত্তরের পথে দীর্ঘ যানজটের কারণে যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে। আগে টিকিট কেটেও অনেককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাবের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
মহাখালী বাস টার্মিনালে রাজশাহী, বগুড়া ও নাটোরগামী ‘একতা’ পরিবহনের টিকিট বিক্রি করছেন সাঈদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হাতে বিক্রি করার মতো এখন আর কোনো টিকিট নেই। আমাদের যাত্রীরা এসে বসে আছেন, তাঁরা যেতে পারছেন না। আমাদের গাড়িগুলো যমুনা সেতুর ওপারে জ্যামে আটকে আছে।’
টার্মিনালে ঘুরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল আটটা-নয়টায় যে গাড়িগুলো ছাড়ার কথা, সেগুলো ছাড়ছে বিকেল চারটার দিকে। এ সময় মাইকে সকাল নয়টার যাত্রীদের গাড়িতে ওঠার জন্য বলতেও শোনা যায়।
সকাল ১০টার পর থেকে মহাখালী বাস টার্মিনালে রংপুরগামী এসআর পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মোবাইদুল ইসলাম। বিকেল চারটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গত ১৯ তারিখে টিকিট কেটেছি। বেলা ১১টার পর গাড়ি আসার কথা ছিল, এখনো আসেনি। কখন আসবে, তা–ও জানায়নি।’
তবে এবারের ঈদযাত্রার কিছু ভালো চিত্রও দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তেমন পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদারক করতে মহাখালী বাস টার্মিনালে কাজ করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একটি টিম।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিআরটিএর ঢাকা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ‘টিকিটের সংকট নেই, তবে একটু চাপ আছে। যাত্রীর চাপ সামাল দিতে বিআরটিএর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত গাড়ি সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা গতকাল রাতে বিআরটিএর পক্ষ থেকে ১৫টি গাড়ি পাঠিয়েছি।’