ভূমিসংক্রান্ত তিন আইন আসছে কয়েক মাসের মধ্যে: ভূমিমন্ত্রী

রাজধানীতে নেটজ বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘ভূমি ব্যবহার ও মালিকানাস্বত্ব’ আইনের খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার পথে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পরবর্তী বাজেট অধিবেশনের আগেই সংসদে আইন তৈরির জন্য তা পাঠানো হবে।

‘দ্বন্দ্বের পরিবর্তনশীলতা এবং অহিংস রূপান্তরমূলক পদ্ধতি: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভূমি অধিকারের ওপর একটি নিবিড় পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে কথাগুলো বলেন ভূমিমন্ত্রী। আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ সেমিনার হয়। এর আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নেটজ পার্টনারশিপ ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড জাস্টিস (নেটজ বাংলাদেশ)।

এ সময় ভূমিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, একই সময় ‘ভূমি ব্যবহার স্বত্ব গ্রহণ আইন’ এবং ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’-এর খসড়াও সংসদে পাঠানো সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘ভূমি ব্যবহার ও মালিকানাস্বত্ব আইনে’র আওতায় নাগরিকদের ‘সার্টিফিকেট অব ল্যান্ড ওনারশিপ’ তথা সিএলও নামক একটি ডকুমেন্ট দেওয়া হবে। যেখানে ভূমি মালিকানার সব তথ্য থাকবে। জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য বিভিন্ন ধরনের দলিলের প্রয়োজন হবে না। একই সঙ্গে স্মার্ট কার্ডও দেওয়া হবে। কার্ডে মালিকানার সব ডিজিটাল তথ্য থাকবে। ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার’ আইনের আওতায় অবৈধ ভূমি দখলকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে উপযুক্ত শাস্তি ও জরিমানার ব্যবস্থা থাকবে। ‘ভূমি ব্যবহার স্বত্ব গ্রহণ’ আইনের আওতায় মাটির তলদেশ দিয়ে পাইপলাইন স্থাপন ও মাটির নিচে অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে করলে পুরো জমি অধিগ্রহণ করার প্রয়োজন হবে না, অধিকন্তু জমির মালিক আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, তিনটি আইন পাস হলে তা ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে, যা পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কার আনবে।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার কাউকে সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচনা করে না। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, আমরা বাংলাদেশি। বাংলাদেশ বহু নৃগোষ্ঠীসংবলিত একটি দেশ।’ তিনি এ সময় সরকারের গৃহায়ণ কর্মসূচির আওতায় গৃহহীন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর পরিবারের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান।

মন্ত্রী মনে করেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল জরিপ শেষ হলে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব অনেকাংশে কমে আসবে। তিনি বলেন, ‘আমরা নাগরিকদের জন্য “কমফোর্ট জোন” তৈরি করছি এবং দেশের অপেক্ষাকৃত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি।’

সমতল অঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত জনসাধারণের ভূমিসম্পর্কিত দ্বন্দ্বের নানা দিক এবং অহিংস পদ্ধতিতে দ্বন্দ্ব সমাধানের পদ্ধতি ও সম্ভাব্য উপায় সংশ্লিষ্ট এক গবেষণার ওপর সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের (রিইব) নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা।

সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান, ডাসকো ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আকরামুল হক বক্তব্য দেন।