বুয়েটের ১৯ ভবনের ছাদে বসছে সৌরচুল্লি

‘বুয়েট রুফটপ সোলার প্রজেক্ট’ প্রকল্পের আওতায় সৌরচুল্লি বসানো হচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ১৯টি ভবনের ছাদে বসছে সৌরচুল্লি। নিজস্ব উৎস থেকে বিদ্যুৎ পাওয়ার লক্ষ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় এসব চুল্লি বসানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশা, সৌরবিদ্যুতের এই প্রকল্প থেকে দৈনিক গড়ে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

‘বুয়েট রুফটপ সোলার প্রজেক্ট (বিআরএসপি)’ নামে এই সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে সোমবার বিকেলে বুয়েটের যন্ত্র প্রকৌশল ভবনের ছাদে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বুয়েটের উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদার, সহ-উপাচার্য আবদুল জব্বার খান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বুয়েটের দৈনিক বিদ্যুৎ চাহিদার ৩০ শতাংশ মেটাবে এই প্রকল্প। এতে বছরে সাশ্রয় হবে এক কোটি টাকার বেশি। ২৫ বছরে মোট সাশ্রয় হবে ২৮ কোটি টাকা।

প্রকল্প উদ্বোধনের পর আলোচনা অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘দেশে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। এর বড় অংশ জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে উৎপাদন করতে হয়। আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা সব সময়ই ভাবতে হয়েছে। সব ক্ষেত্রে পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এগোতে হবে।’

মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাদে সৌরচুল্লি স্থাপনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ৩৩ হাজার। সেগুলোর ছাদে সৌরচুল্লি বসালে একদিকে যেমন ‘ক্লিন এনার্জি’ পাওয়া যাবে, তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচও কমবে।

বুয়েট উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদার বলেন, যখনই কোনো প্রযুক্তি আসে দেশে তার ব্যবহার বাড়াতে নানাভাবে কাজ করে থাকে বুয়েট। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে বুয়েট সব সময় সহযোগিতা করে।

প্রকল্পটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি
ছবি: প্রথম আলো

ভবিষ্যতে প্রতিটি বাড়িতে সৌরচুল্লি বসবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদার। এ কাজে বুয়েট সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন বুয়েটের সহ-উপাচার্য আবদুল জব্বার খান। তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে চার ঘণ্টা সৌরশক্তি পাওয়া গেলে সাড়ে ৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে দৈনিক অন্তত ১২ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে ওপেক্স মডেলে। প্রকল্পে বুয়েট শুধু দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত ছাদগুলো দিচ্ছে। ইনস্টলেশন করছে তিনটি প্রতিষ্ঠানের কনসোর্টিয়াম জিপিপিএস। তাদের সঙ্গে বুয়েটের চুক্তির মেয়াদ ২৫ বছর।

প্রকল্প সহযোগী প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো পিএসএল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড গ্রিন এনার্জি লিমিটেড, জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও প্যাসিফিক সোলার অ্যান্ড রিনিওয়াবল এনার্জি লিমিটেড।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর মোর্শেদ, পিএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসমা জাহান হক, জেনেক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিদুল আলম প্রমুখ।