‘সিঁড়িটার নিচেই ভাইকে পাওয়া যেতে পারে’

মেহেদী হাসান ওরফে স্বপনের খোঁজ করছেন তাঁর স্বজনেরা।
ছবি: জাহিদুল করিম

রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত সাততলা ভবনটির বেজমেন্টে আছে বাংলাদেশ স্যানিটারি ও আনিকা এজেন্সি নামের দুটি দোকান। দুটি দোকানই স্যানিটারিসামগ্রীর। বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশ স্যানিটারির ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান ওরফে স্বপন ও আনিকা এজেন্সির মালিক মমিনুদ্দিন সুমনের খোঁজ এখনো মেলেনি। স্বজনদের ধারণা, দুজনই বেজমেন্টের ভেতর আটকে আছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি ভবন সাততলা, আরেকটি পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত অনেকে।

বিধ্বস্ত সাততলা ভবনের বেজমেন্টে এখনো ঢুকতে পারেননি উদ্ধারকর্মীরা। সেখানে আরও মানুষ আটকে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

মেহেদীর ভাই সোহাগ ও মামাশ্বশুর আবদুল মান্নান আজ বুধবার সকালেই ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা কান্নাকাটি করছিলেন। তাঁরা উদ্ধারকাজ শুরুর জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছিলেন।

মেহেদীর দোকানটি কোথায়, তা উপস্থিত লোকজনকে দেখাচ্ছিলেন সোহাগ। তিনি বলছিলেন, ‘এই সিঁড়িটার নিচেই আমার ভাইয়ের দোকান। ধ্বংসস্তূপ সরালে সিঁড়িটার নিচে ভাইকে পাওয়া যেতে পারে।’

মেহেদীর বাড়ি নোয়াখালী। তাঁর পরিবার সেখানেই থাকে। সোহাগ জানান, মেহেদীর ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ের বয়স ছয় বছর। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মেহেদী।

আনিকা এজেন্সির কর্মচারী সম্রাটের লাশ গতকাল রাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু মালিক মমিনুদ্দিনের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। মমিনুদ্দিনের বন্ধু ব্যবসায়ী মো. আরিফ বলেন, ‘গতকাল হাসপাতালে খুঁজেছি। কোনো খোঁজ পাইনি। নিহত ও আহত—দুই তালিকাই দেখেছি। কোথাও তাঁর নাম নেই। মমিনুদ্দিন হয়তো বেজমেন্টের ভেতর আটকে আছেন।’

আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে আজও উৎসুক জনতার ভিড় রয়েছে। তাদের সরাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। সরিয়ে দেওয়া হলেও তারা আবার ঘটনাস্থলের আশপাশে এসে ভিড় করছে।