ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুম’ কর্মসূচিতে ডাকা নিয়ে তর্কাতর্কিকে কেন্দ্র করে বিজয় একাত্তর হলে গোসলখানায় এক ছাত্রকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্র হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মুর্শেদুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র মো. নাঈম তাঁকে পিটিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুর্শেদুল ও নাঈম দুজনই ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (প্রথম বর্ষ) ছাত্র। দুজনই বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগনিয়ন্ত্রিত গণরুমে থাকেন। ছাত্রলীগের নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের নিয়মিত গেস্টরুম ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধ্যতামূলকভাবে অংশ নিতে হয়।
বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ৭ মার্চ গেস্টরুমে না যাওয়ায় নাঈমের মাধ্যমে মুর্শেদুলকে ডেকে পাঠান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। গণরুমে ডাকতে গেলে নাঈমের সঙ্গে মুর্শেদুলের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে তাঁদের দুজনকে একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে বকাঝকা করে ঘটনার ‘মীমাংসা’ করে দেন দ্বিতীয় বর্ষের একদল শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী মুর্শেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘৭ মার্চের ঘটনার পর আজ দুপুর একটার দিকে আমি গোসল করতে হলের গোসলখানায় যাই। এ সময় হঠাৎ একজন এসে গোসলখানার দরজায় লাথি দেন। দরজা খুলে দেখি নাঈম। সে জামার মধ্য থেকে রড বের করে আমাকে মারার জন্য। আমি ভয়ে দরজা আটকে দিতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সে রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। এরপর হাতে ও পিঠে অসংখ্য আঘাত করে। পরে আমাদের অন্য বন্ধুরা দেখতে পেয়ে তাঁকে নিবৃত্ত করে ও আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি আছেন মুর্শেদুল। তিনি আগামীকাল হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করবেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজ সন্ধ্যায় নাঈমের মুঠোফোনে কল করে পরিচয় দেওয়ার পর তিনি কল কেটে দেন। বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম ওরফে শরীফের অনুসারী বলে পরিচিত নাঈম। সাইদুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘৮ মার্চের মনোমালিন্যের পর আমরা ডেকে নাঈম ও মুর্শেদুলকে মিলিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই ঘটনার রেশ যে এখনো রয়ে গেছে, তা আমরা বুঝতে পারিনি। আজ যা ঘটেছে, তা একটা দুর্ঘটনা।’
এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ আবদুল বাছির রাত নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এখনো তিনি বিষয়টি অবহিত নন। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে হলের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।