শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে গড়ে তোলা কাউন্সিলরের কার্যালয় উচ্ছেদে রাজউকের অভিযান

গেন্ডারিয়ার ডিআইটি পুকুরপাড়ে অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদে অভিযান চালাচ্ছে রাজউক। পুরান ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর
ছবি: দীপু মালাকার

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় শত বছরের পুরোনো ডিআইটি পুকুর ভরাট করে নির্মাণ করা কাউন্সিলরের কার্যালয় ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালাচ্ছে রাজউক। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এ অভিযান শুরু হয়েছে।

গত জুনে গেন্ডারিয়ার ডিআইটি পুকুরের আশপাশে অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয় রাজউক। তখন স্থানীয় কাউন্সিলরের কার্যালয় ও একটি দোতলা স্থাপনা ভাঙা হয়নি। এসব স্থাপনা সরিয়ে নিতে রাজউকের পক্ষ থেকে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়।

পরে গেন্ডারিয়ার ডিআইটি পুকুর ও আশপাশের স্থাপনা উচ্ছেদের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন আদালত। সেই মেয়াদ ৫ সেপ্টেম্বর শেষ হলে আদালত আর সময় বাড়াননি। এখন স্থানীয় কাউন্সিলরের কার্যালয় ও অবৈধ স্থাপনা ভাঙতে অভিযান শুরু করেছে রাজউক।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ বেলা ১১টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও উচ্ছেদ অভিযানের সরঞ্জাম নিয়ে গেন্ডারিয়ায় আসেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আরা। পুকুরটি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি আদালতের স্থগিতাদেশের নথি নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির হন।

তখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আরা বলেন, আদালতের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ওই সময় জাকির হোসেনের কাছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানতে চান, এসব স্থাপনা নির্মাণের সময় রাজউকের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল কি না? জবাবে জাকির হোসেন বলেন, অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্থাপনা ভাঙার নির্দেশ দেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাকির হোসেনের কাছ থেকে পুকুরটি ভাড়া নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার (কাউন্সিলর) সাইদুর রহমান ওরফে সহিদ। পুকুরটি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেন তিনি। সাইদুর রহমান ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সাহানা আক্তারের বাবা।

রাজউকের অভিযানের খবর পেয়ে আগেই কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে সব মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়। কার্যালয়ের নিচতলায় যেসব দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছিল, সেসব দোকানের মালামাল আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া পুকুর ভরাট করে আরও একটি দোতলা ভবন নির্মাণ করে সেখানে কারখানা স্থাপন করা হয়েছিল। ওই কারখানার মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, কাউন্সিলরের লোভের কারণে পুরান ঢাকার পুরোনো একটি পুকুর বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। সরকার পুকুরটি রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ায় এলাকার লোকজন খুশি হয়েছেন। এই পুকুর ঘিরে যাতে আবারও স্থাপন নির্মাণ করে বাণিজ্য না করা হয়, সেই দিকে সরকারকে নজর রাখতে হবে।