বকেয়া বেতন চাওয়ায় দোকানকর্মীকে মারধর, থানায় অভিযোগ

আক্রান্ত দোকান কর্মচারী নিউমার্কেট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেনফাইল ছবি: ডিএমপি নিউজ

বেতন-ভাতার পাওনা টাকা চাওয়ায় রাজধানীর নীলক্ষেতের একটি বইয়ের দোকানের এক কর্মচারীকে মারধর ও হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার এ ঘটনায় রাতে নিউমার্কেট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই কর্মচারী। অভিযোগটি পুলিশ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেছে।

নীলক্ষেতের বইয়ের মার্কেটের ‘পিজি মেডিকেল বুক শপ’ নামের একটি দোকানের দুই মালিকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী মো. হানিফ দীর্ঘদিন এই দোকানে কাজ করেন। দোকানের মালিক ওমর ফারুক ও সোহাগ হোসেন তাঁর আপন মামাতো ভাই। তাঁদের সবার বাড়ি চাঁদপুরে।

থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে হানিফ বলেন, তিনি ১৫-১৬ বছর ধরে ওই দোকানে কর্মরত আছেন। ১০ মাস ধরে ওমর ও সোহাগ তাঁকে ঠিকমতো বেতন-ভাতা দিচ্ছিলেন না। ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় সোহাগকে তিনি ১০ মাসের বেতন-ভাতা হিসাব করে ঈদ বোনাসসহ পরিশোধের কথা বলেন। সোহাগ তখন তাঁকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ঈদের পরে বাকি পাওনা দেওয়ার কথা বলেন। এ সময় ১৫ হাজার টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে হানিফ পুরো পাওনা বুঝিয়ে দিতে বলেন। তখন সোহাগ আবারও বাকি টাকা ঈদের পরে পরিশোধের কথা বলেন।

লিখিত অভিযোগে হানিফ আরও বলেন, কিছুক্ষণ পর তিনি দোকানে গিয়ে ওমর ফারুক ও সোহাগকে একসঙ্গে দেখতে পান। এ সময় ওমর ফারুক তাঁর কাছে ওই ১৫ হাজার টাকা না নেওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময় তিনি পুরো পাওনা পরিশোধের কথা বলেন। জবাবে ওমর ফারুক আর অল্প কিছু পাওনা থাকার কথা জানান। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ওমর ফারুক তাঁর বাঁ কান বরাবর থাপ্পড় মারেন ও টালি খাতা দিয়ে একই কান ও গালে মারতে থাকেন। এ সময় পাশে থাকা সোহাগ তাঁকে গালাগাল করেন এবং চাকু দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

হানিফ বলেন, তাঁকে মারধরের সময় অন্যান্য দোকানের লোকজন এগিয়ে এলে ওমর ফারুক ও সোহাগ নিজেদের মতো হিসাব করে তাঁকে ১০ মাসের পাওনা বাবদ ১৪ হাজার ৪০০ টাকা দেন। এর প্রতিবাদ করলে তাঁরা তাঁকে আবারও গালিগালাজ করেন এবং ‘দুনিয়া থেকে উঠিয়ে দেওয়াসহ’ নানা হুমকি দেন।

হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মাসিক বেতন ২০ হাজার টাকা। ১০ মাসে তিনি ওমর ও সোহাগের কাছে বেতন বাবদ ২ লাখ টাকা পান। এর মধ্যে তিনি অর্ধেকের মতো টাকা পেয়েছেন।

অভিযুক্ত ওমর ফারুক প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, হানিফের অভিযোগ মিথ্যা। হানিফ তাঁর আপন ফুফাতো ভাই। তাঁর কোনো বেতন-ভাতা পাওনা নেই। বছর দু-এক আগে হানিফ তাঁদের দোকান থেকে টাকা চুরি করেছিলেন। এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানায় জিডিও করা হয়েছিল। বিষয়গুলো তাঁরা পারিবারিকভাবে সমাধান করবেন।

এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক বিশ্বজিৎ প্রথম আলোকে বলেন, হানিফের অভিযোগটি জিডি হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তদন্তের অনুমতির জন্য বিষয়টি আদালতে পাঠানো হবে।