বিএনপির ডাকা অবরোধ এবং অন্যান্য সমমনা দল ও জোটের ডাকা হরতালের প্রভাবে রাজধানীর গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে আজ সকাল থেকে তেমন যাত্রী ছিল না। যাত্রীর অভাবে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়নি।
তবে জরুরি প্রয়োজনে গন্তব্যে যেতে সকাল থেকে হাতে গোনা কিছু যাত্রীকে টার্মিনালে গিয়ে টিকিটের খোঁজ করতে দেখা গেছে। এসব যাত্রীর কাছে কোনো বাস কোম্পানি বেলা দেড়টা বা দুইটার পর বাস ছাড়বে জানিয়ে টিকিট বুকিং নিচ্ছিলেন। কোনো কোনো বাস কোম্পানি আবার সন্ধ্যার পরে রাতে নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়বে বলে টিকিট বিক্রি করেন।
সাড়ে ১০টার দিকে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর যেতে গাবতলী টার্মিনালে যান সুমা আক্তার। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্যারামেডিকসের কাজ করেন। আগামী শনিবার ফরিদপুরে এ বিষয়েই তাঁর একটি পরীক্ষা আছে। তাতে অংশ নিতে বাড়ি যাচ্ছেন বলে জানান।
সুমা আক্তার বলেন, ফরিদপুরের কোনো গাড়ি পাইনি। মাগুরা এক্সপ্রেস নামের একটি গাড়ির টিকিট কেটেছি। বেলা দেড়টার পর ছাড়বে বলেছে। আবার কিছুক্ষণ দেরি হতেও পারে বলে জানানো হয়েছে।
বেলা দেড়টার দিকে গাড়ি ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়ে টিকিট বিক্রি করছিলেন কুষ্টিয়াগামী হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার শরীফ মাহমুদ। তিনি বলেন, কাউন্টার থেকে সরাসরি আটটি টিকিট বিক্রি হয়েছে। অনলাইনে আরও সাতটি বুকিং দেওয়া আছে। কোনোটি বাদ না গেলে নির্ধারিত সময়ে গাড়ি ছাড়া হবে। কারণ, গাড়ি চালু করলে আরও কিছু যাত্রী পাওয়া যাবে।
বেলা দেড়টার হানিফ বাসের টিকিট কাটেন চান্নু আলী ও মনি খাতুন দম্পতি। সঙ্গে তাঁদের আড়াই বছরের সন্তান হুজাইফা ছিল।
চান্নু আলী জানান, কুষ্টিয়া তিত্তিপাড়া যাব। সেখানে আগামী শনিবার শ্যালকের বিয়ে।
অবরোধ কর্মসূচির অন্য দিনের মতোই আজ গাবতলীতে পরিবহনকর্মীদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। বেশির ভাগ টিকিট বিক্রির কাউন্টার বন্ধ ছিল।
যেসব বাস কোম্পানি সাধারণত নির্ধারিত সময়ে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে রওনা হয়, এসব কোম্পানির বাসগুলোর সন্ধ্যা ও রাতের যাত্রার টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
শ্যামলী এন আর পরিবহনের প্রথম গাড়ি ছাড়া হবে সন্ধ্যা ৬টায়। হানিফ এন্টারপ্রাইজের প্রথম গাড়ি ছাড়বে সন্ধ্যা সাতটায়। দর্শনা ডিলাক্সের প্রথম বাস ছাড়া হবে সাড়ে সাতটায়।
দর্শনা ডিলাক্স পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শরীফ উদ্দিন বলেন, সাড়ে ৭টার গাড়িতে ১৫টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। পরে সাড়ে ১০টায় আরেকটা গাড়ি আছে। ওই গাড়িতে ২৫টি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তবে সকাল থেকে তাঁদের কোনো গাড়ি ছাড়েনি বলে জানান তিনি।
শ্যামলীর এন আর ট্রাভেলসের কাউন্টার মাস্টার বিল্লাল হোসেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যা ৬টায় নওগাঁর উদ্দেশ্যে প্রথম গাড়ি ছাড়া হবে। ১২টা টিকিট বিক্রি হয়েছে। পরের গাড়ি সন্ধ্যা ৭টায়। ওই গাড়িতে ১৩টি টিকিট বিক্রি হয়েছে।
তবে সকালে কোনো গাড়ি ছাড়েনি জানিয়ে বিল্লাল বলেন, সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাঁদের ১৫টি গাড়ি ছাড়ার সূচি ছিল। যাত্রীর অভাবে একটিও ছাড়া হয়নি।
এদিকে হরতাল ও অবরোধের প্রভাব রাজধানীর সড়কগুলোতে তেমন নেই। আগের অবরোধের চেয়ে সড়কে গণপরিবহনসহ অন্যান্য যান বেশি।
সকাল থেকে শ্যামলী, কল্যাণপুর, গাবতলী, মিরপুর-১ ও মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় কিছুটা যানজটও দেখা যায়।