ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোটা সংরক্ষণ পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, শাহবাগে অবস্থান

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করে
ছবি: সাজিদ হোসেন

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে তাদের পদযাত্রার কথা ছিল।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার কিছু পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকা থেকে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের মিছিল বের হয়। মিছিলটি শাহবাগে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে পৌঁছালে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) শেখ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের বাধা দেন। পরে মিছিলটি আর এগোতে পারেনি।

পরে পুলিশের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে পাঁচজন প্রতিনিধি ঠিক করেন আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে পরিষদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে যায়। সংগঠনের অন্য নেতা-কর্মীরা শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন। দুপুর সোয়া ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও তাঁরা সেখানে ছিলেন। প্রতিনিধিদল না ফেরা পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান করবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বৃহৎ আন্দোলনের কারণে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা বাতিল করে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা অন্তত অনগ্রসর আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছিলাম। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সে বছরের ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন যে কোটা বাতিল হলেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীরা সব সময় অগ্রাধিকার পাবেন। কিন্তু কোটা বাতিল–পরবর্তী ৪০তম বিসিএসের সম্প্রতি প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে আদিবাসীদের প্রতি সরকারের কোনো অগ্রাধিকার বা বিবেচনা দেখা যায়নি। বিষয়টি আমাদের অত্যন্ত অবাক ও হতাশ করেছে। আমরা মনে করি, আদিবাসীসহ দেশের অনগ্রসর মানুষের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটার প্রয়োজনীয়তা এখনো ফুরিয়ে যায়নি।’

স্মারকলিপিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তিন দফা দাবি জানিয়েছে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদ। এগুলো হলো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির নিয়োগে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন, সম্প্রতি প্রকাশিত ৪০তম বিসিএসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীদের ফলাফল পুনর্বিবেচনা এবং প্রথম-দ্বিতীয়সহ সব শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা নিশ্চিত ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ আদিবাসী কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করলে শাহবাগে পুলিশ বাধা দেয়
ছবি: সাজিদ

কর্মসূচিতে পুলিশি বাধার নিন্দা জানিয়েছেন আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের সদস্যসচিব অলীক মৃ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে না ফেরা পর্যন্ত আমরা শাহবাগে অবস্থান করছি। ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ধারাবাহিক কর্মসূচি চলবে।’