আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার পেলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার দেওয়া হয়। ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি
সাবিনা ইয়াসমিন

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। রাজধানীতে আহমদ শরীফের জন্মশতবর্ষ স্মারক বক্তৃতা ও স্মারক পুরস্কার অনুষ্ঠানে তাঁকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।

বুধবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ড. আহমদ শরীফ জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন কমিটি।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ড. আহমদ শরীফ একজন পণ্ডিত ছিলেন, একজন লেখক ছিলেন। কিন্তু এই পরিচয়ের বাইরেও তিনি একজন বুদ্ধিজীবী ছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এই সমাজের অসুখটা কোথায়।’

আহমদ শরীফের একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আহমদ শরীফ বলেছিলেন, “পৃথিবীর গরিব দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রই সর্বোৎকৃষ্ট”। আজকে থাকলে তিনি এ কথা বলতেন, কেবল পৃথিবীর গরিব দেশগুলোর জন্য নয়, সমগ্র পৃথিবীর জন্য আজকে সমাজতন্ত্র ভিন্ন অন্য কোনো পথ নেই।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শারীরিক অসুস্থতার কারণে আহমদ শরীফ জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক বদরুদ্দীন উমর উপস্থিত থাকতে পারেননি। অনুষ্ঠানে তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনানো হয়। লিখিত বক্তব্যে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘আহমদ শরীফ শুধু লেখার মাধ্যমে নয়, প্রতিবাদী বাস্তব কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও তিনি সক্রিয় থাকতেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তি।’

আহমদ শরীফ জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আহমদ শরীফ তাঁর ৭৮ বছরের জীবনে শিক্ষকতা, গবেষণা শিক্ষামূলক প্রবন্ধ এবং চিন্তাশীল নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি বাঙালি ও বাংলা সাহিত্যের অনেক অজানা ইতিহাস সামনে এনেছেন। রাজনীতিকেও তিনি গুরুত্ব দিতেন। কিন্তু তিনি কোনো দলের হয়ে চিন্তা করেননি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে আহমদ শরীফ বেঁচে থাকলে বলতেন, ছাত্ররা আন্দোলন করছে, আপনারা কোথায়? আর কত ঘুমাবেন?’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আহমদ শরীফের পাণ্ডিত্য, গবেষণা, শিক্ষকতা—তাঁর ভূমিকা সমস্ত কিছু নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় একজন শিক্ষক। কিন্তু তাঁর জন্মশতবর্ষ হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই অর্থে তেমন কোনো কর্মসূচি নেই। এই পরিস্থিতিতে আহমদ শরীফ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলতে যে দায়ের কথা ভাবি, গবেষক বলতে যে নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে কথা ভাবি, অধ্যাপক আহমদ শরীফের মধ্যে তা ছিল।’

এ বছর আহমদ শরীফের ওপর স্মারক বক্তব্য দেন কলকাতার বিদ্যাসাগর মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যাপক ও আহমদ শরীফ গবেষক ড. প্রথমা রায়মণ্ডল। কিন্তু তিনি করোনা মহামারির কারণে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর ভিডিও বক্তব্য অনুষ্ঠানে শোনানো হয়। অনুষ্ঠানে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন আহমদ শরীফের ছেলে নেহাল করিম।