ইরফান সেলিমের রিমান্ড শুনানি বুধবার

ইরফান সেলিম

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় সাংসদ হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদকে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। আগামীকাল বুধবার রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন ঢাকার এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ আলী।
বিদেশি মদ সেবনের দায়ে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল সোমবার ইরফানকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি অবৈধ ওয়াকিটকি রাখা ও ব্যবহারের দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। আজ মঙ্গলবার নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ এবং অসদাচরণের অভিযোগে তাঁকে কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন। ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদ বর্তমানে কারাগারে।

গত রোববার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি তাঁর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। ওই গাড়িতে ছিলেন হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান এবং তাঁর লোকজন। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিয়ে গাড়িটিকে থামতে ইশারা করেন ও কথা বলতে চান। তখন তাঁকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন ইরফান ও তাঁর লোকজন।
পরে গতকাল সোমবার সকালে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। এরপর শুরু হয় পুলিশ ও র‍্যাবের তৎপরতা। গতকাল সকালে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ জানায়, ইরফানের গাড়িচালক মিজানুর গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকালই আদালত তাঁকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন। আর আজ ইরফানের সহযোগী এ বি সিদ্দিক ওরফে দিপুকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।

আদালতে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক মো. আশফাক রাজীব হাসান উল্লেখ করেছেন, গত রোববার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খান স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে মোহাম্মদপুরে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি যখন ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে আসেন, তখন পেছন থেকে গাড়িটি তাঁর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। তখন তিনি নিজের পরিচয় দেন। তারপরও গাড়ি থেকে নেমে এসে একজন অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর রাত ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সিগন্যালে ওই গাড়ি দাঁড়ায়। তখন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খান ওই গাড়ির জানালায় নক করেন। গাড়ির সবাই তখন নেমে আসেন। তখন পুনরায় তিনি নিজের পরিচয় দেন। তারপরও সবাই মিলে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খানকে অতর্কিতভাবে হামলা করেন। লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এ সময় নৌবাহিনীর কর্মকর্তার স্ত্রী তাঁর স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও ধাক্কা দেন। তাঁদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এলাকা ত্যাগ করেন। নৌবাহিনীর কর্মকর্তা মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলে সাধারণ মানুষ ও সেখানে কর্মরত পুলিশ সদস্য তাঁকে উদ্ধার করেন। ওই সময়ে গাড়ির একজনের ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র উদ্ধার হয়। তিনি হলেন মদিনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এ বি সিদ্দিক। এ ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে এই দুই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার বলে উল্লেখ করেন।