উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে জাবিতে ঝাড়ুমিছিল

উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঝাড়ুমিছিল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ১০ ফেব্রুয়ারি ছবি: প্রথম আলো
উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঝাড়ুমিছিল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ১০ ফেব্রুয়ারি ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে ঝাড়ুমিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বিকেলে এই মিছিল হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে শুরু হওয়া এই মিছিল ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক ঘুরে পরিবহন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে উপাচার্যের ‘মধ্যস্থতায়’ ছাত্রলীগকে বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগের তদন্তের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত বছরের ২৩ আগস্ট শুরু হওয়া এ আন্দোলন ১৮ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের পদত্যাগ দাবির আন্দোলনে রূপ নেয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় গত বছরের ২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন মোড় নেয় উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে। ১০ দিন উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ রাখার পর ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। পরদিন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের পিটিয়ে সরিয়ে দেন। সেদিনই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর ১ মাস পর ৫ ডিসেম্বর থেকে আবার বিশ্ববিদ্যালয় সচল হলে থেমে থেমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করার জন্যই আজ আমরা হাতে ঝাড়ু তুলে নিয়েছি। উপাচার্য শুধু বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেননি, তিনি সারা দেশের দুর্নীতিবাজের মডেলে পরিণত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য আমরা যেকোনো কঠোর কর্মসূচি নিতে দ্বিধা করব না।’

ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হক বলেন, ‘আমরা বারবার উপাচার্যকে বলেছি যে আপনি যদি চুরি-দুর্নীতি না করে থাকেন, তবে তদন্ত করুন। কিন্তু যখনই তদন্তের আলাপ শুরু হলো, তখনই তিনি বারবার পিছিয়ে গেছেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর তিনি এ ঘটনাকে গণ-অভ্যুত্থান হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, যা প্রমাণ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নির্দেশদাতা উপাচার্য।’

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শাকিল উজ্জামান বলেন, ‘এই উপাচার্য আমাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা চালিয়েছেন। নৈতিক আন্দোলন বন্ধ করার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা আমাদের ওপর হামলা করিয়েছেন। এ ধরনের মনমানসিকতাসম্পন্ন উপাচার্যের কাছে আমরা নিরাপদ নই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ও নিরাপদ নয়।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য কনোজ কান্তি রায়, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রশিদ প্রমুখ।