‘এ যেন মশার রাজধানী’

মশার অসহনীয় উপদ্রব থেকে রাজধানীবাসীকে রক্ষার দাবিতে ভাড়াটিয়া পরিষদ মানববন্ধন করে। এ সময় সংগঠনের এক সদস্য মশারির ভেতরে মশা মারার প্রতীকী প্রতিবাদ দেখান। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ১২ মার্চ
ছবি: আশরাফুল আলম

রাজধানীতে মশার উপদ্রব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভাড়াটিয়া পরিষদ। তারা বলেছে, বস্তি থেকে অভিজাত এলাকা—সর্বত্রই এখন মশা। এ যেন মানুষের নয়, মশার রাজধানী। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। মশা মারার ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না।

আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এই অভিযোগ করে ভাড়াটিয়া পরিষদ। মশার অসহনীয় উপদ্রব থেকে রাজধানীবাসীকে রক্ষার দাবিতে এই মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নগরীর খাল-নালা পরিষ্কার না করায় মশার প্রজননস্থল বেড়েছে। মশার প্রকোপ এত বেশি যে মশারি-কয়েল-স্প্রেতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। আধা ইঞ্চি মশা মারতে ঢাকার দুই মেয়র ব্যর্থ হয়েছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

বিভিন্ন গবেষণার বরাত দিয়ে বক্তারা বলেন, রাজধানীতে মশার ঘনত্ব বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। প্রতিবছর ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু মশা থেকে মুক্তি দেওয়ার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নগরবাসী দেখতে পাচ্ছে না।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে ভাড়াটিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. বাহারানে সুলতান অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আগে থেকে মশা নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিলে নগরবাসীকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। বিভিন্ন এলাকার মশকনিধন কর্মীদের দায়িত্বে অবহেলার ফল এখন সাধারণ মানুষ ভোগ করছে। তারা সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ অনুযায়ী বাসাবাড়ির আঙিনা, জলাশয়, ডোবা ও ড্রেনে ওষুধ ছিটালে মশার বিস্তার ঘটত না। মশা বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে আনা যেত।

বাহারানে সুলতান বলেন, মশা জলাশয়ে বেশি বংশবিস্তার করে। সে ক্ষেত্রে সেখানে কীটনাশক স্প্রে করে মশার লার্ভা নষ্ট করা ও পরিষ্কার রাখা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব। ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি সিটি করপোরেশনকে ডোবা-জলাশয়ে পানির প্রবাহ সচল করে দিতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আগে মশকনিধন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। রাজধানীর ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সব ভবনের ছাদ-বেসমেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ও পানি জমে থাকে। এসব স্থানে মশা বংশবিস্তার করে। তাই এসব ভবনকে নজরদারির আওতায় আনতে হবে।

রাজধানীর বাড়িওয়ালাদের উদ্দেশ করে বাহারানে সুলতান বলেন, ‘ভাড়াটেদের অভিভাবক হিসেবে আপনাদের কিছু দায়িত্ব আছে। আপনারা নিজ উদ্যোগে আপনাদের বাড়ি, আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। মশকনিধন কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। এতে ভাড়াটেদের পাশাপাশি আপনাদের পরিবারও সুরক্ষিত থাকবে।’