এফ আর টাওয়ারে নকশা জালিয়াতে ১৮ জন অভিযুক্ত

অগ্নিকাণ্ডের পর রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারফাইল ছবি

বনানীর এফ আর টাওয়ার (ফারুক-রূপায়ন টাওয়ার) নির্মাণে নকশা জালিয়াতিতে ১৮ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ১৫ জনই রাজউকের। অনুমোদিত নকশার বাইরে এই ভবনের অতিরিক্ত পাঁচতলা নির্মাণের সঙ্গে এসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত ছিলেন। দুদক ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আজ বুধবার অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের জানান। গত বছরের ২৫ জুন দুদকের উপপরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেছিলেন। তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত বছরের ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে ২৬ জন মারা যান, আহত ৭৩ জন। এরপরই এফ আর টাওয়ার নির্মাণে নকশা জালিয়াতির তথ্য জানাজানি হয়। এ ঘটনায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলাদা তদন্ত করে। দুর্নীতি দমন কমিশনও অনুসন্ধান শেষে মামলা করে।

দুদকের মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত প্রধান আসামি করা হয়েছে এফ আর টাওয়ারের ইজারা গ্রহীতা সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুক ওরফে এস এম এইচ আই ফারুককে। অভিযোগপত্রে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমানে চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল (এল এ মুকুল) ও কাসেম ড্রাইসেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসভীর-উল-ইসলাম যথাক্রমে ২ ও ৩ নম্বর আসামি। অন্য ১৫ জন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

অভিযোগপত্রভুক্ত রাজউকের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা হলেন সাবেক ইমারত পরিদর্শক ও পরবর্তী সময়ে সহকারী অথরাইজড অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, পরিচালক (এস্টেট) মো. শামসুল আলম, সাবেক উপপরিচালক (এস্টেট) মুহাম্মদ শওকত আলী, সহকারী পরিচালক (এস্টেট) শাহ মো. সদরুল আলম, তত্ত্বাবধায়ক (এস্টেট) জাহানারা বেগম, পরিদর্শক মো. মেহেদউজ্জামান, নিম্নমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক মুহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লা, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনামুল হক, সাবেক পরিচালক (এস্টেট) মো. আবদুল্লাহ-আল-বাকী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক মো. মোফাজ্জেল হোসেন, উচ্চমান সহকারী মো. সাইফুল আলম, ইমারত পরিদর্শক (নকশা জমা গ্রহণকারী) ইমরুল কবির, ইমারত পরিদর্শক (নকশা জমা গ্রহণকারী) মো. শওকত আলী, উচ্চমান সহকারী (ইস্যুকারী, সাময়িক বরখাস্ত) মো. শফিউল্লাহ ও সাবেক অথরাইজড অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে যোগসাজশে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে রাজউক থেকে ছাড়পত্র ইস্যু, ফি জমা নেওয়া, নকশা অনুমোদন না নিয়ে ভুয়া নকশা তৈরি করা এবং এফ আর টাওয়ারের ১৯ থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত অবৈধভাবে নির্মাণ করে তা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক দেওয়া, ফ্লোর বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতি করেছেন। অগ্নিকাণ্ডে জনসাধারণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

দুদকের অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, মামলার তদন্তকালে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় সাতজন আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।