কথা ও গানে জিয়াউদ্দিন তারিক আলীকে স্মরণ

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই ভার্চ্যুয়াল স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

জিয়াউদ্দিন তারিক আলী
ফাইল ছবি

জিয়াউদ্দিন তারিক আলী ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একজন মানুষ। অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে তারিক আলীকে যথাযথ মূল্যায়ন ও শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আয়োজিত স্মরণসভায় এ মন্তব্য করেন বিশিষ্টজনেরা।

গতকাল শনিবার বিকেলে ওই ভার্চ্যুয়াল স্মরণসভার আয়োজন করে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন তারিক আলী। একাত্তরে শরণার্থীশিবিরসহ বিভিন্ন স্থানে যে গানের দল ঘুরে ঘুরে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছে, সেই দলের সদস্য ছিলেন তারিক আলী। ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আরেক ট্রাস্টি সারওয়ার আলীর সভাপতিত্বে বুলবুল ইসলামের কণ্ঠে ‘জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে,/ বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে’ শিরোনামের রবীন্দ্রসংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্মরণসভাটি।

তারিক আলীকে স্মরণ করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড, সামাজিক আন্দোলন ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা থেকে তারিক আলী ও তিনি একসঙ্গে নানা কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি—গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের প্রতি তারিক আলী অনুগত ছিলেন এবং তা সমাজের বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে দিতে কাজ করতেন।

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘জীবিত তারিক আলীকে যথাযোগ্য মূল্যায়ন করা হয়নি। অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের লড়াই ধরে রাখা এবং এ আন্দোলনে গতি সৃষ্টির হাতছানি রয়েছে আমাদের সামনে। এ দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তারিক আলীকে যথাযথ শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আন্দোলন করতে গিয়ে অনেককে আপস করতে হয়েছে। তবে তারিক আলী কখনো আপস করেননি। তারিক আলীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের আগ্রহের কথা জানান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

তারিক আলীকে কথা ও গানে আরও স্মরণ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য অ্যারোমা দত্ত, নারী সংগঠক রোকেয়া কবির, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সদস্যসচিব নূর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ। সভাটি সঞ্চালনা করেন নারী সংগঠক খুশী কবির।

‘তাহারে ভুলিবে বলো কেমনে/ গাঁথা যে সে তব শত গানের যতনে’ শিরোনামের গানটির সঙ্গে গানপাগল তারিক আলীর একাত্তরে ও বিভিন্ন আন্দোলনে ভূমিকা পালনের বিভিন্ন ছবি তুলে ধরার মধ্য দিয়ে শেষ হয় স্মরণসভা।