করোনা চিকিৎসার ব্যয় বেশি সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে: জাফরুল্লাহ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ফাইল ছবি

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও কোনো কিছু পরোয়া না করার কারণে চিকিৎসার ব্যয় বেশি হচ্ছে। ওষুধের বেশি দামের কারণে আইসিইউতে খরচ বেশি। এতে পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ‘করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতার প্রেক্ষাপটে করণীয়’ বিষয়ে নাগরিক সংবাদ সম্মেলনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, করোনায় একজন মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু পুরো পরিবারকে হত্যা করছে সরকার। এর কারণ সরকারের অব্যবস্থাপনা, জবাবদিহির অভাব, কোনো ধরনের পরোয়া না করা। একটা আইসিইউতে প্রতিদিনের খরচ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা। ওষুধের ওপর করের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা করাতে গিয়ে একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। এটা সরকারের ব্যর্থতা। সরকার নির্দিষ্ট বিষয়ে অজ্ঞ লোক দিয়ে সবকিছু চালাচ্ছে।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, আইসিইউর ওষুধের দাম খুব বেশি। কাজেই চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারগুলো সর্বস্বান্ত হচ্ছে। সব ওষুধের মূল্য সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেশে করোনার টিকা উৎপাদন করতে হবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজগুলোতে আরও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে যুক্ত হন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘সরকার বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা তৈরি করেছেন। এভাবে অবহেলা চলতে থাকলে সরকারের পক্ষে করোনা সমস্যা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। সরকারের কোথাও চেইন অব কমান্ড নেই।’ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করে তাদের সিদ্ধান্তমতো কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, ‘করোনার নতুন ধরন যে অনেক মারাত্মক, তা সবাই তিন–চার মাস আগে থেকেই জানে। কিন্তু সরকারের কাছে মোদির আগমনই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরিকল্পনাবিহীন লকডাউন দিয়ে সরকার করোনাকে আরও বিকেন্দ্রীকরণ করেছে। সরকারের জবাবদিহি না থাকায় যা ইচ্ছা তাই করছে।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ভুল পদক্ষেপের কারণে সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্যও সরকারের কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না। স্বাস্থ্য খাতে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। সাধারণ মানুষকে অভুক্ত রেখে এই লকডাউন নামের তামাশা চলতে পারে না।’
সরকার এক বছরে ১ হাজার আইসিইউ তৈরি করতে পারেনি কেন? এ প্রশ্ন তোলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি করে করোনা মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্ব আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ, রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ভূঁইয়া প্রমুখ।