করোনা পরীক্ষায় দেরি হওয়ায় ফ্লাইট ধরতে পারেননি আমিরাতের ৮০ যাত্রী

বিমানবন্দরের ভেতরে করোনা পরীক্ষা করতে সময় লাগায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের যাত্রীদের অনেকে ফ্লাইট ধরতে পারছেন না। ছবিটি মঙ্গলবার রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে থেকে তোলা
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করতে সময় লাগছে। বিমানবন্দরে এসে সংযুক্ত আরব আমিরাতগামীদের অন্তত ১০ বার বিভিন্ন জায়গায় লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এসবের মধ্য দিয়ে বেশি সময় পার হওয়ায় করোনা পরীক্ষা করে ফ্লাইট ধরতে পারছেন না অনেকে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাতে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের আরব আমিরাতগামী একটি ফ্লাইট ছিল। যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে এসে করোনা পরীক্ষা করে ফল আসতে দেরি হওয়ায় অন্তত ৮০ জন যাত্রী ফ্লাইটটি ধরতে পারেননি। বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার ফল দিতে বিলম্ব হওয়ায় তাঁরা নির্ধারিত সময়ে বোর্ডিং কাউন্টারে পৌঁছাতে পারেননি। আগেই কাউন্টার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর ফ্লাইট ধরা সম্ভব হয়নি।

এ তথ্য নিশ্চিত করে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করে ফল পেতে বিলম্ব হওয়ায় অনেকে ফ্লাইট ধরতে পারছেন না। সময়মতো করোনা পরীক্ষার ফল দিতে হবে। এ রকম দেরি হলে হবে না। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগকে আরও দ্রুত করোনা পরীক্ষার ফল দিতে হবে। আরব আমিরাতের যাত্রীদের জন্য যাতে আরও অল্প সময়ে করোনা পরীক্ষার ফল দেওয়া যায়, সেটা দেখতে হবে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফ্লাইট ধরতে না পারা ওই যাত্রীদের আমিরাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিহাদ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ওই ৮০ জন যাত্রীকে ইতিহাদের পরবর্তী ফ্লাইটে নেওয়া হবে।

যাত্রীদের করণীয় প্রসঙ্গে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক বলেন, যাত্রীদের সঠিক সময়ে বিমানবন্দরে আসতে হবে। নির্ধারিত ফ্লাইট সূচির অন্তত ছয় থেকে আট ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে এলে এ ধরনের সমস্যা হবে না।

করোনা পরীক্ষায় দেরি হওয়ায় ফ্লাইট ধরতে না পারা ৮০ যাত্রীকে পরবর্তী ফ্লাইটে নিতে চেয়েছে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

আরব আমিরাতগামী এয়ারলাইনসগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফ্লাইট ছাড়ার কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে বোর্ডিং কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন না দেওয়ায় যাত্রীরা বোর্ডিং কাউন্টার বন্ধ হওয়ার পর আসছেন, যখন আর তাঁদের ফ্লাইটে নেওয়ার সুযোগ নেই।

তবে দু–একজন যাত্রী হলে ফ্লাইট দেরি হলেও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ছিল। কিন্তু যাত্রীদের সংখ্যা অনেক বেশি হলে তখন নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমিরাতগামী একটি এয়ারলাইনসের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনা পরীক্ষা নিয়ে কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই। যাত্রীদের ফ্লাইটের সময় বিবেচনা করে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। রিপোর্ট দেওয়ার পর আবার সেটাও অনলাইনে যাচাইয়ের জন্য যাত্রীদের লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে অহেতুক সময় নষ্ট করা হচ্ছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৬ দিনে বিমানবন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী ৩ হাজার ২৪৯ জন করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। যাত্রার ছয় ঘণ্টার মধ্যে এই পরীক্ষা হয় যাত্রীদের। গত ছয় দিনে মাত্র একজনের পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে।