কারাগারের নিরাপত্তায় দোকানপাট বন্ধ

নাজিমুদ্দিন রোডের গতকালের চিত্র
নাজিমুদ্দিন রোডের গতকালের চিত্র
  • বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।
  • খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে রাখা হয়েছে।
  • খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার জন্য কারাগারের আশপাশে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।

পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারের আশপাশে দোকানপাট পাঁচ দিন ধরে বন্ধ রেখেছে পুলিশ। এতে বিপাকে পড়েছেন এই এলাকার ব্যবসায়ীরা।

গত বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার পর তাঁকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে নেওয়া হয়। তাঁর নিরাপত্তার জন্যই পুলিশ এই ব্যবস্থা নিয়েছে।

নাজিমুদ্দিন রোডের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিরাপত্তার অজুহাতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই এলাকায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল এবং দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে। নিরাপত্তা তল্লাশি বাড়িয়ে নাজিমুদ্দিন রোডে যান চলাচল ও দোকানপাট খুলে দেওয়ার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, কারাগারের উত্তর-পূর্ব পাশে (মাক্কুশা মাজার) লোহার বেড়া দিয়ে রেখেছে পুলিশ। একইভাবে চকবাজার, বেগমবাজার ও আবুল হাসনাত রোড থেকে নাজিমুদ্দিন রোডের প্রবেশমুখেও নিরাপত্তা বেড়া। এতে রিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে পথচারীদের পরিচয় জেনে ও তল্লাশি করে কারাগারের সামনে দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হয়। কিন্তু নাজিমুদ্দিন রোডের এই অংশের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ আছে। ফার্নিচারের কিছু দোকান খোলা থাকলেও সেগুলোতে ক্রেতা ও মালিকপক্ষের কাউকে দেখা যায়নি। অলস সময় কাটাচ্ছেন কর্মচারীরা।

জোনাকী ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী ও মাক্কুশা মাজার ফার্নিচার দোকান মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ জিয়াউল হক বলেন, নিরাপত্তার কথা বলে বৃহস্পতিবার দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ। তাদের কথামতো অধিকাংশ দোকানই বন্ধ আছে। তিনি বলেন, কারাগারের সামনের অংশে ফার্নিচারের দোকান আছে ৪২টি। বেগমবাজার, আবুল হাসনাত রোড অংশেও ২০-২৫টি দোকান আছে। গতকাল সকালে পুলিশের অনুমতি নিয়ে কিছু দোকান খুলেছেন মালিকেরা। কিন্তু কোনো দোকানেই বেচাবিক্রি হয়নি। এভাবে আর কয়েক দিন চললে ব্যবসা গুটিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে হবে।

গতকাল সকালে পুলিশের অনুমতি নিয়ে দোকান খুলেছে ফাহাদ ফার্নিচার। কিন্তু সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একজন ক্রেতাও পাননি বলে জানান স্বত্বাধিকারী আবু বক্কর। তিনি বলেন, রাস্তাঘাট বন্ধ থাকায় ক্রেতাদের মনে আতঙ্ক কাজ করছে। অথচ কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। একই কথা বলেছেন বিসমিল্লাহ বেডিং স্টোর, সিদ্দিক ফার্নিচারের দোকান মালিক ও শ্রমিকেরা।

জানতে চাইলে পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার ইব্রাহীম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত রোববার নাজিমুদ্দিন রোডের দোকানপাট খুলতে ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। এখন তাঁরা না খুললে আমাদের কী করার আছে।’

রাস্তা বন্ধ রাখায় ক্রেতারা আসতে পারছেন না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। জবাবে ইব্রাহীম খান বলেন, ক্রেতা বা পথচারীর চলাচলের জন্য গতকাল সন্ধ্যায় এই রাস্তাটি বেড়া কমিয়ে কারাগারের সামনের গোল চত্বর পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। এখন এই রাস্তা দিয়ে পথচারী বা যানবাহন চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।