কেনাকাটার আনন্দে মাস্ক আনতেই ভুলে গেছেন তাঁরা

ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত নগরবাসী
দীপু মালাকার

সামসুল হক সপরিবার এসেছিলেন সদরঘাটে ঈদের কেনাকাটা করতে। তিনি একটি পোশাক কারখানায় সেলাইয়ের কাজ করেন। বেতন-বোনাস পাওয়ার পর অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী মূল্যে কেনাকাটার জন্য সদরঘাটে এসেছেন। পরিবারের চার সদস্যদের মধ্যে শুধু সামসুল হকের মুখেই মাস্ক ছিল।


মাস্ক ব্যবহার না করার কারণ হিসেবে বলেন, ‘ঈদের কেনাকাটা করার আনন্দে ছেলেমেয়েরা বাসা থেকে মাস্ক নিতে ভুলে গেছে। কেনাকাটা শেষে মাস্ক কিনেই বাড়ি ফিরব।’

পুরান ঢাকা সদরঘাট ও ওয়ারী এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য আরও দেখা যায়। ঈদের শেষ সময়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষ। প্রতিটি মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মাসজুড়ে ঈদের বাজার জমে থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীন ছিলেন সবাই।

মার্কেটগুলোয় প্রবেশের সময় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার চেষ্টা করলেও দোকানের ভেতর বিক্রেতা ও ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীন দেখা যায়। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটায় অনেকেই ভিড় জমান পুরান ঢাকা বৃহত্তর কাঁচাবাজর এলাকা শ্যামবাজার, রায়সাহেব বাজার ও লক্ষ্মীবাজর এলাকায়।

আজ বুধবার সকাল থেকে সদরঘাট এলাকায় শরিফ মার্কেট, গ্রেড ওয়াল ও লেডিস মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, স্বল্প আয়ের লোকজন এসেছেন কেনাকাটা করতে। যাচাই–বাছাই ও দরদাম করে পছন্দের কাপড় কিনছেন। দল বেঁধে অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে মার্কেটে এসেছেন। প্রয়োজনে অনেকে কেনাকাটা করতে এলেও অনেকে আবার এসেছিলেন ঘোরাঘুরি করতে।

কামরুল হাসান ও তাঁর তিন বন্ধু এসেছিলেন পাঞ্জাবি কিনতে। সকাল থেকে ঘুরে কামরুল ও তাঁর এক বন্ধু পাঞ্জাবি কেনেন। অন্য দুই বন্ধু এসেছেন শুধু তাঁদের সঙ্গ দেওয়ার জন্য।

পুরান ঢাকার অভিজাত এলাকা ওয়ারী। এই এলাকায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যান্ডের শোরুম বেশি। শেষ সময়ে এসব শোরুমে ক্রেতাদের ভিড়। শোরুমের প্রবেশের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ঢোকানো হচ্ছিল। ক্রেতাদের দেওয়া হচ্ছে স্যানেটাইজার। তবে ভেতরে প্রবেশ করে অনেককেই মাস্ক খুলে কথা বলা ও কাপড় ট্রায়াল দিতে দেখা যায়। আবার রাস্তার আশপাশে বিভিন্ন ইফতার ও খাবারের দোকানে ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।

ইসলামপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নেসার উদ্দিন বলেন, ‘করোনা সচেতনতায় সব মালিককে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আমরাও নজরদারিতে রেখেছিলাম। গতকাল ইফতারের আগে থেকেই আমাদের কেনাবেচা বন্ধ রাখা হয়েছে।’


ঈদের বিক্রি সম্পর্কে নেসার উদ্দিন বলেন, ‘ঈদের আগেই আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। তবে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রি অর্ধেকের মতো হয়েছে। এরপরও সরকার দোকান খোলা রাখার সুযোগ দেওয়ায় করোনায় আমাদের জীবন ও জীবিকা স্বাভাবিক ছিল।’