খোলা আকাশ, বাঁশঝাড় ও ফুডকোর্ট

ক্রেতার অপেক্ষায় বনানীর ফুডকোর্টের লাল ইটের তৈরি আসন। গত মঙ্গলবারের ছবি l প্রথম আলো
ক্রেতার অপেক্ষায় বনানীর ফুডকোর্টের লাল ইটের তৈরি আসন। গত মঙ্গলবারের ছবি l প্রথম আলো

বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর দক্ষিণ পাশে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কমিউনিটি সেন্টার ঘেঁষে একটি এলাকা ঘেরা দেওয়া। ভেতরে লাল ইটের তৈরি কয়েকটি কক্ষের একটি স্থাপনা। এটি সিটি করপোরেশনের তৈরি ফুডকোর্ট।

ডিএনসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (অঞ্চল–৩) ও ফুডকোর্টের প্রকল্প পরিচালক খন্দকার মাহবুব আলম জানান, করপোরেশনের খোলা জায়গায় প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক এই ফুডকোর্ট করার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী, স্থপতি কাসেফ চৌধুরীর নকশায় ও তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় এক বিঘা জায়গার ওপর তৈরি ফুডকোর্টটি নির্মাণ করতে দুই কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে। ২০১৬ সালের শেষ দিকে কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১৭-এর অক্টোবরে।

মাহবুব আলম বলেন, ঢাকা শহরে বসার মতো জায়গা কম। বনানী এলাকায় অনেকগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস আছে। তাদের জন্য বসার বা আড্ডা দেওয়ার জায়গা একবারেই কম। কেবল দোকান নয়, মানুষ খাবে, গল্প করবে—এই চিন্তা থেকে ফুডকোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। এই ফুডকোর্টের উত্তরে বনানী ২৭ নম্বরের পার্ক, পাশে বনানী কমিউনিটি সেন্টার, বনানী মাঠসহ পুরো এলাকার উন্নয়নের অংশ এই ফুডকোর্ট। এটি নির্মাণ করেছে এস এম কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ থেকে সম্পত্তি বিভাগে হস্তান্তরের পর চালু হবে বনানীর ফুডকোর্ট
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ থেকে সম্পত্তি বিভাগে হস্তান্তরের পর চালু হবে বনানীর ফুডকোর্ট

সরেজমিনে দেখা যায়, ফুডকোর্টটির মাঝে খোলা জায়গা রেখে চারপাশে খাবারের দোকান ও বসার জায়গা রাখা হয়েছে। বসার জায়গা, টেবিল ও দোকানগুলো লাল ইটের তৈরি। বসার জায়গার পাশেই বাঁশঝাড়ের একটি মনোরম পরিবেশ। চারপাশে হাসনাহেনার চারা বড় হচ্ছে, কয়েকটিতে ফুলও ফুটেছিল। তবে টগর, কাঠগোলাপ ও আমের চারাগুলো এখনো যেন শিশু-কিশোর। আরও কিছু ফুলের চারা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।

গতকাল দুপুরে ঘের দেওয়ার জায়গার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে একটি বেঞ্চে বসে আপন মনে পুতুলের জামা সেলাই করছে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শরীফা বেগম। পাশের একটি বেঞ্চে মুখ ঢেকে ঘুমাচ্ছে তার মা। তিনি ডিএনসিসির কাঁচাবাজারে সবজি ধোয়ার কাজ করেন। কাজের অবসরে জিরিয়ে নিচ্ছেন।

আশপাশের দু-একজন দোকানি এসে মাঝেমধ্যে বসছেন, ধূমপান করছেন। আছে একটি অস্থায়ী চায়ের দোকান। এর মালিক মিজানুর রহমান নিজেকে এস এম কনস্ট্রাকশন কোম্পানির নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে পরিচয় দেন। ডিএনসিসির কমিউনিটি সেন্টারের প্রবেশপথ ঘেঁষে আবর্জনার গাড়িও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

প্রকল্প পরিচালক খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, ফুডকোর্টটি সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ থেকে সম্পত্তি বিভাগে শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে। এরপরই আনুষ্ঠানিকতা শেষে এটি চালু হবে।