গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে আসবে ১২ কোটি টাকা
রাজধানীর গাবতলী ও মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালের দায়িত্ব আগামী এক বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম তাঁর নগর ভবনের কার্যালয়ে ইজারাদারদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
গাবতলী বাস টার্মিনাল ৭ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা হয়েছে। রাফি ট্রেডার্স লিমিটেড নামের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইজারাটি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লিয়াকত হোসেন মেয়রের কাছ থেকে দায়িত্বটি বুঝে নেন।
আর মহাখালী বাস টার্মিনালের ইজারা পেয়েছে গাজী রাইয়ান এন্টারপ্রাইজ। এটি বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেনের (সাচ্চু) প্রতিষ্ঠান। ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকায় এই টার্মিনালটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। মেজবাউল হোসেন নিজে মেয়রের কাছ থেকে দায়িত্বটি বুঝে নেন।
ডিএনসিসির পরিবহন শাখার কর্মকর্তারা জানান, ২০০৯ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের আমলে এই দুই টার্মিনালে আদায় সহকারী নিয়োগ করা হয়েছিল। আদায় সহকারীদের দৈনিক গাবতলী টার্মিনাল থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা আর মহাখালী টার্মিনাল থেকে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা সিটি করপোরেশনকে জমা দেওয়ার শর্ত ছিল।
কিন্তু ওই দুই টার্মিনালের আদায় সহকারীরা নানা অজুহাতে বছরের পর বছর দৈনিক নির্ধারিত টাকা জমা দেননি। বকেয়া এই টাকার পরিমাণ ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। এ কারণে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর লক্ষ্যে টার্মিনাল দুটিতে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারাদার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, আদায় সহকারীরা বছর শেষে যে পরিমাণ টাকা সিটি করপোরেশনকে জমা দিতেন, তার দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা ইজারাদার নিয়োগের মাধ্যমে করপোরেশনের আয় হবে। টার্মিনাল দুটির ইজারা হয়েছে ১২ কোটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। আর আদায় সহকারীদের জন্য দৈনিক যে টাকা করপোরেশনকে জমা দেওয়ার কথা, সে হিসাবে বার্ষিক সিটি করপোরেশন পেত ৬ কোটি ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা।
দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে অতীতে সেভাবে কোনো রাজস্ব আদায় করা যায়নি। দায়িত্ব নিয়ে দেখেছি, এখানে গলদ ছিল। নানা অজুহাতে তারা সিটি করপোরেশনকে রাজস্ব দেয়নি। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীরা সুবিধা নিচ্ছিল জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দিয়েছি। ইজারার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমাদের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি তাঁদের বলেছি, কারও কথা শোনার দরকার নেই।’
মেয়র বলেন, ইজারাদারদের বাস টার্মিনালে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্ত ভঙ্গ করলেই ইজারা বাতিল হবে। আগের বিশৃঙ্খল পরিবেশ আর থাকবে না বলেও তিনি জানান।
দায়িত্ব হস্তান্তরকালে অন্যদের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) মিজানুর রহমান, প্রধান ভান্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা সগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।