জুনে নতুন রূপে হাজির হচ্ছে মাঠটি

এই নকশার আদলে গোলাপবাগ মাঠের সংস্কারকাজ চলছে।
এই নকশার আদলে গোলাপবাগ মাঠের সংস্কারকাজ চলছে।
>

• মাঠটির আয়তন প্রায় সাড়ে ৪ একর
• মাঠের সংস্কারকাজ করছে ডিএসসিসি
• কাজ তদারকে ডিএসসিসির অঞ্চল-৫
• সংস্কারে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা

প্রায় এক দশক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নির্মাণসামগ্রী রাখা ছিল গোলাপবাগ খেলার মাঠে। এতে মাঠটিতে খেলাধুলা করতে পারেনি এলাকার শিশু–কিশোর–তরুণেরা। মাঠ থেকে নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নেওয়ার পর শুরু হয় মাঠের সংস্কারকাজ। এরপর থেকে মাঠে নামার অপেক্ষায় দীর্ঘদিন খেলাধুলাবঞ্চিত এলাকাবাসী। তাদের সেই অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। আগামী জুনের মধ্যে নতুন রূপে হাজির হচ্ছে মাঠটি।

মাঠের সংস্কারকাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংস্কারকাজের তদারক করছে ডিএসসিসির অঞ্চল-৫।

ডিএসসিসি সূত্র জানায়, গোলাপবাগ মাঠের সংস্কারকাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। প্রায় সাড়ে ৪ একর আয়তনের মাঠে থাকবে একটি বাণিজ্যিক ভবন, ক্রিকেট ও ফুটবল মাঠ, বাস্কেটবল কোর্ট ও স্কেটিংয়ের জায়গা। থাকবে গ্রন্থাগারও। ইতিমধ্যে বাণিজ্যিক ভবনের ভিত্তি তৈরি ও গ্রন্থাগার ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। এখন মূল মাঠের কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই মাঠ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নির্মাণকাজে ব্যবহৃত হয়। এর আগেও এই মাঠে খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা তেমন ছিল না।

ডিএসসিসির অঞ্চল-৫–এর উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মাঠের সংস্কারকাজ শুরু। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। তবে বিভিন্ন কারণে যথাসময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাই আগামী জুন পর্যন্ত কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। তিনি জানান, গোলাপবাগ মাঠের পশ্চিম পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি বাণিজ্যিক ভবন। সেখানে ৪৩টি দোকান থাকবে। ভবনে থাকবে একটি ব্যায়ামাগার। এ ছাড়া দুটি গণশৌচাগারও করা হবে। মাঠের সার্বিক কার্যক্রম তদারকির জন্য করা হবে একটি অফিস কক্ষ। ভবনের দোতলায় থাকবে দর্শক গ্যালারি। যেখানে বসে একসঙ্গে প্রায় তিন হাজার দর্শক খেলা উপভোগ করতে পারবেন। থাকবে একটি ভিআইপি গ্যালারিও।

জানা গেছে, শিশুদের খেলাধুলার জন্য থাকবে বিভিন্ন রাইড। মাঠের ভেতরে ও বাইরে চারপাশে থাকবে হাঁটার পথ। প্রতিবন্ধীদের হাঁটার ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে। হাঁটার পথ ঘেঁষে মাঠের ভেতরে গাছ লাগানো হবে।

গতকাল সোমবার দেখা গেছে, ইতিমধ্যে বাণিজ্যিক ভবনের মূল পিলার বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। ১০ জন শ্রমিক সেখানে কাজ করছেন। গ্রন্থাগার ভবনের নির্মাণকাজের অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি। মাঠের কয়েকটি অংশে সীমানাদেয়াল তৈরির কাজ চলছে। উড়ালসড়কের নির্মাণসামগ্রীর কিছু ধ্বংসাবশেষ মাঠের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পড়ে আছে। এক্সকাভেটর দিয়ে সেগুলো সরানো হচ্ছে।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির অঞ্চল-৫–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, ডিএসসিসি যেসব মাঠের সংস্কারকাজ করছে, সেগুলোর মধ্যে আয়তনের দিক দিয়ে গোলাপবাগ মাঠ সবচেয়ে বড়। সব শ্রেণির মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে মাঠটি সংস্কার করা হচ্ছে।

সংস্কারকাজ করতে গিয়ে মাঠটিকে তিন ফুট উঁচু করতে হয়েছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মূল কাজগুলোর অগ্রগতি ভালো। দ্রুত পুরো কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।’