চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়েছে তারা

চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এই তিনজনকে (মাঝে) গ্রেপ্তার করে সিআইডি। আজ সিআইডি কার্যালয়ে
ছবি: সংগৃহীত

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন টার্মিনাল-৩–এ চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ১৫০ জনের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দর্পণ গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গতকাল বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম সোহাগ (৫২), ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনা জহির (৫০) ও ম্যানেজার মিন্টল রায় ওরফে অপূর্ব রায় (২৮)।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক শেখ ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি Samsung গ্রুপের নামে একটি ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার প্রস্তুত করে তাদের অফিসের সামনে ডিজিটাল ব্যানারে ‘হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩–এ দক্ষ-অদক্ষ লেবার ও সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হবে’ এমন একটি বিজ্ঞাপন ঝুলিয়ে রাখে। এমন বিজ্ঞাপন দেখে চাকরিপ্রত্যাশী ভুক্তভোগী অনেকেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে।

সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, এরপর চাকরিপ্রত্যাশীরা শ্রমিক পদের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং সুপারভাইজার পদে প্রত্যেকের জন্য ১ লাখ টাকা দেন। তাদের এমন আশ্বাসে শ্রমিক ও সুপারভাইজার পদে চাকরি পাওয়ার জন্য ১০০ থেকে ১৫০ চাকরিপ্রত্যাশী দর্পণ গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং এমডির কাছে টাকা দিলে তাঁদের চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।

সিআইডির কর্মকর্তা শেখ ওমর ফারুক বলেন, ভুক্তভোগী ১০০–১৫০ লোককে দর্পণ গ্রুপ কোম্পানির অফিসে গিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩–এ যোগদানের বিষয় আলাপ করলে প্রতিষ্ঠানটি অপেক্ষা করতে বলে। পরে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩–এ চাকরি দেওয়ার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে কেউ কাজের অনুমতি দেয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চাঁদপুরের সুজন বলেন, ‘যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে সরকার মার্কেটের তিন তলায় ডিজিটাল ব্যানারে টাঙানো দেখি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। আগ্রহী হয়ে কথা বলতে যাই। দর্পণ নামের ওই অফিস থেকে জানানো হয়, সুপারভাইজার ১ লাখ, অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা দিলেই কেবল চাকরি হবে। আমরা চলে আসি। দুই দিন পর ভাইভা নেন, নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে তিনজনকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে হাতে নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়ে নেওয়া হয় আড়াই লাখ টাকা। আবার করোনা টেস্টের কথা বলে আরও ৫ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়। সন্দেহ হলে সবাই বিমানবন্দরে যাই। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান কাজের অনুমতি পায়নি।’