চার বছরেও হয়নি যুবনীতির কর্মপরিকল্পনা

চার বছর পেরিয়ে গেলেও জাতীয় যুবনীতি ২০১৭–এর বাস্তবায়ন হয়নি। দেশে যুবদের উন্নয়নে নীতিমালা বাস্তবায়নে দ্রুত কর্মপরিকল্পনা করা দরকার। পাশাপাশি এই যুবনীতির কর্মপরিকল্পনায় শারীরিক প্রতিবন্ধী, গ্রামীণ যুব নারী, তৃতীয় লিঙ্গসহ সব যুবার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।

আজ বুধবার সকালে এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন আলোচকেরা। একশনএইড বাংলাদেশ ও যুব উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

আলোচনায় একশনএইড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক নাজমুল আহসান বলেন, জাতীয় যুবনীতি ২০১৭ বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হচ্ছে না।

যুবনীতির আলোকে কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার কথা থাকলেও গত চার বছরে তা শুরু হয়নি। অথচ কর্মপরিকল্পনা তৈরির আগেই যুবনীতি পর্যালোচনার সময়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। তিনি বলেন, যুবনীতির কার্যকর বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রশাসনিক উদ্যোগ না হলে নীতিমালা শুধু প্রণয়নের মধ্যে থেমে যাবে এবং এটি যুবদের উন্নয়নে কোনো কাজে আসবে না।

সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় যুবকদের প্রতিনিধিত্বের কোনো সুযোগ থাকে না উল্লেখ করে ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অমিয় প্রাপন চক্রবর্তী বলেন, দেশে বাজেট প্রণয়নের আগে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়। কিন্তু দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী তরুণ ও যুবকদের নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। তিনি বলেন, বর্তমানে যুবকদের গুণগত শিক্ষা, মূলধারায় সম্পৃক্ত করা, বাজেট বরাদ্দ এবং যুবনীতি বাস্তবায়ন ও মনিটরিং প্রক্রিয়ায় শহরের মতো গ্রামীণ যুবদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনায় যুবনীতি বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে পাঁচটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো হলো যুবনীতির বাস্তবায়নে দ্রুত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া, যুব কাউন্সিল গঠন করা, যুব বাজেট পর্যালোচনা ও পুনর্মূল্যায়ন করে বাস্তবসম্মত এবং প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করা, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে যুবকদের অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যকর ও দৃশ্যমান কাজ করা, যুব ঋণের পাশাপাশি যুবদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। দেশের বর্তমানে জনমিতি লভ্যাংশ (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) তথা তরুণদের কাজে লাগাতে তাঁদের সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি যুবদের উন্নয়নে এখনই যুবনীতি ২০১৭ বাস্তবায়নের ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে হবে।

আলোচনায় বলা হয়, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে তরুণ জনগোষ্ঠী শিক্ষা, পেশা ও মানসিক স্বাস্থ্যগত ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে আছে। বৈশ্বিক মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় তরুণদের অংশগ্রহণে প্রয়োজনীয় সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রধান সমন্বয়ক কাজী সালমান হোসেন।