চীনের নাগরিক হত্যার দায় স্বীকার করে দুজনের জবানবন্দি

চীনা নাগরিক গাও জিয়াং। ফাইল ছবি
চীনা নাগরিক গাও জিয়াং। ফাইল ছবি

চীনের নাগরিক গাও জিয়াং হুই হত্যা মামলায় দুই আসামি ঢাকার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম) জবানবন্দি রেকর্ড করার পর গত সোমবার তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

দুই আসামি হলেন নড়াইলের লোহাগাড়া থানার চাচই গ্রামের ওয়াদুদ মোল্লার ছেলে ইনামুল হক (২৫) ও ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার পাতবিলা গ্রামের মফিদুল ইসলামের ছেলে আবদুর রউফ (২২)।

এ ছাড়া এই হত্যা মামলায় সাক্ষী হিসেবে জয়নন্দী নামের এক ব্যক্তির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন ঢাকার আদালত। চীনের নাগরিক গাও যে বাসায় থাকতেন, জয়নন্দী সেখানে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ফজলুল হক আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, গাও জিয়াং হুই হত্যার দায় স্বীকার করে আসামি ইনামুল ও রউফ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। টাকা লুট করার জন্য এই দুই আসামি পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা ফজলুল হক জানান, আসামি রউফ ওই বাসায় গত অক্টোবর মাসে এসেছিলেন। আর এনামুল এসেছিল গত মাসে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত হওয়ার আগে তাঁরা অন্য কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না, তা খোঁজ করে দেখা হচ্ছে।

১০ ডিসেম্বর বিকেলে বনানীর ২৩ নম্বর রোডের এ ব্লকের ৮২ নম্বর বাড়ির পেছনের খালি জায়গায় গাও জিয়াং হুইয়ের মাটিচাপা দেওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই বাড়ির ছয়তলায় একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। এ ঘটনায় চীনা নাগরিক ঝাং শু হং বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলা দায়েরের সাত দিনের মাথায় গাও জিয়াং হুই হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে এনামুল ও রউফকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

ঢাকার আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল হক জানান, গাও জিয়াং হুই যে বাসায় কাজ করতেন, সেই বাসায় নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্ব পালন করতেন আসামি রউফ ও এনামুল হক। গাও জিয়াং নিয়মিতভাবে অনেক নগদ টাকা নিয়ে চলাচল করতেন। এই দুই নিরাপত্তারক্ষী তা জেনে ফেলেন। এরপর পূর্বপরিকল্পনা করে পানি খাওয়ার নাম করে বাসায় ঢুকে গলায় গামছা দিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর লাশ গুম করার জন্য চীনা নাগরিকের মরদেহ ওই বাসার পেছনে পুঁতে রাখেন। এরপর গাও জিয়াং হুইয়ের টাকা তাঁদের বাসার আত্মীয়স্বজনের কাছে বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন।