চুড়িহাট্টায় আগুন: ভবন মালিক দুই ভাইসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ধংসস্তুপে পরিণত হয় পুরো এলাকা। ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে।ফাইল ছবি

চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তিন বছর পর ভবনের মালিক দুই সহোদর মোহাম্মদ হাসান সুলতান ও হোসেন সুলতানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাইয়ুম ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় বিভিন্ন সময় আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন আটজন। অভিযোগপত্রে তাঁদের সবাইকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪, ৪২৭, ৪৩৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, দুই ভাই ছাড়া রাসায়নিকের গুদামের মালিক ইমতিয়াজ আহমেদ, পরিচালক মোজাম্মেল ইকবাল, ম্যানেজার মোজাফফর উদ্দিন, মোহাম্মদ জাওয়াদ আতিক, মো. নাবিল ও মোহাম্মদ কাশিফকে আসামি করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর চুড়িহাট্টা মোড়ের কাছে চারতলা ওয়াহেদ ম্যানশন থেকে লাগা আগুন আশপাশের কয়েকটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় ১৪ ঘণ্টা চেষ্টার পর সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনাস্থল থেকে ৬৭ জনের মরদেহ মর্গে পাঠান উদ্ধারকর্মীরা। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১।

পুড়ে যাওয়া ওয়াহেদ ম্যানশনের পাশের ভবনের নিচতলার ‘রাজমহল’ হোটেলের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা ৩২ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। ওই সময় আগুন ওপর থেকে নিচের দিকে ছড়াচ্ছিল এবং সুগন্ধির ক্যানগুলো ছিটকে পড়ছিল।

আরও পড়ুন

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৬৭ জন মারা যান। ঘটনার পরপরই বিস্ফোরণের উৎস ও কারণ নিয়ে নানা বক্তব্য আসতে থাকে। চুড়িহাট্টা মোড়ে বিদ্যুতের কোনো ট্রান্সফরমার না থাকলেও সেখান থেকে আগুনের উৎপত্তি হয়েছিল বলে দাবি করেন কেউ কেউ। কেউ বলেন, ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে থাকা একটি পিকআপ হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে ওপরে ওঠে। এরপর আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আর এলাকার বাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ীরা এককাট্টা হয়ে দাবি করে যাচ্ছেন, যানজটে আটকা একটি পিকআপের ওপর থাকা এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও ঘটনাস্থলের আলামত দেখে তদন্তকারী বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা মনে করছেন, আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনের দোতলা থেকে। ওই তলায় সুগন্ধির ক্যান ও বাল্বের গুদাম ছিল। লাইটার রিফিল করার ক্যানও সেখানে পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন