ছাত্রদলের ১৩ নেতা–কর্মী রিমান্ডে

প্রতীকী ছবি

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ছাত্রদলের ১৩ জন নেতা–কর্মীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পুলিশ ১৩ জন আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ১২ জনকে পাঁচ দিন এবং একজনকে দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

রিমান্ড পাওয়া ১৩ জন আসামি হলেন আহসান হাবিব ভূঁইয়া, কবির হোসেন, মঞ্জুরুল আলম, মনোয়ার ইসলাম, আরিফুল হক, আনিসুর রহমান, আতাউর রহমান, মাসুদ রানা, আতিফ মোরশেদ, রমজান আহমেদ, শফিকুল ইসলাম, মো. শাহিরাজ ও আবু হায়াত জুলফিকার।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের বিক্ষোভ-সমাবেশের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব–উন–নবী খান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীনসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪৭ জন নেতার নাম উল্লেখ করা হয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রদল গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ ডেকেছিল। পুলিশের বাধা, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি ছোড়া, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় সেই কর্মসূচি শুরুর আগেই পণ্ড হয়ে যায়। পুলিশের ধাওয়ার মুখে বিএনপি-ছাত্রদলের কিছু নেতা-কর্মী একপর্যায়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেখানে ঢুকে নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ।

মামলার এজাহারে পুলিশ লিখেছে, রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ছাত্রদল, যুবদল ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা বিনা অনুমতিতে, বেআইনিভাবে, প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে নামে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায় পুলিশ। এরপরও ছাত্রদলের উগ্র বিক্ষোভকারীরা মিছিল ও স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁদের হাতে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল থাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাঁরা লাঠিসোঁটা ও ইটের টুকরা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশের ওপর আঘাত করে। তাঁদের মারধর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের কারণে ১০ জন গুরুতর জখম হন।

নিজেদের জানমাল ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে এ সময় পুলিশ ৭৫টি রাবার বুলেট, ২৬টি সিসা ও ৪টি টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে।

মামলায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, সহদপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের খন্দকার মুজাহিদুল ইসলাম, ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক সওগাতুল ইসলামসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়।