জগন্নাথের নিখোঁজ ছাত্রীকে উদ্ধারের গুজব, গ্রেপ্তার ১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিখোঁজ সেই ছাত্রীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সিআইডির ছাদ থেকে উদ্ধার—এমন গুজব ছড়ানোয় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তাঁর নাম নিরঞ্জন বড়াল। তাঁর বিরুদ্ধ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায়।

২ নভেম্বর নিরঞ্জনকে রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী থেকে ধরা হয়। জব্দ করা হয়েছে তাঁর মোবাইল ফোন। সিআইডি বলেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিরঞ্জন এই পোস্ট দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। পেশায় নির্মাণ খাতের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন নিজে থেকেই এই পোস্ট দিয়েছেন, নাকি কারও উসকানিতে করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের উপমহাপরিদর্শক জামিল আহমেদ বলেন, সিআইডির সাইবার মনিটরিং ও সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনস টিম নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি করে থাকে। গত ৩১ অক্টোবর দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে একটি পোস্ট সিআইডির চোখে পড়ে। ওই পোস্টে লেখা ‘মালিবাগ সিআইডি অফিসের চারতলা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী...হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার। আমি হতবাক।’ ওই পোস্ট খুব দ্রুত শেয়ার ও ভাইরাল করা হয়। পোস্টের উৎস খুঁজতে গিয়ে তারা নিরঞ্জন বড়ালকে খুঁজে পায়।

গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ২ নভেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে নিরঞ্জন বড়ালকে বনশ্রী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি।

সিআইডি জানায়, অনেক দিন ধরেই নিরঞ্জন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। মূলত ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত বা উসকানি দেওয়ার মতো কাজ করে আসছিলেন তিনি। ফেসবুকে তাঁর বন্ধুসংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। নিখোঁজ ওই ছাত্রী তাঁর বন্ধু। নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেও নিরঞ্জনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়।

ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ তিনি। ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ২৪ অক্টোবর রাতে পল্লবী থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ওই ছাত্রীকে পরদিন থানায় দেখা করতে বলেন।

ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানান, ২৫ অক্টোবর সকালে পল্লবী থানায় যাওয়ার উদ্দেশে বের হন ছাত্রী। কিন্তু থানা থেকে জানানো হয়, তিনি থানায় পৌঁছেনি। তাঁর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। প্রথম দিকে পরিবারের সদস্যরা ভেবেছিলেন, বন্ধু বা আত্মীয়ের বাসায় যেতে পারেন। এরপরও ফিরে না আসায় ২৭ অক্টোবর হারিয়ে যাওয়া বিষয়ে একটি মিসিং ডায়েরি করে পরিবার।