জমে ওঠেনি উত্তর সিটির কোরবানির হাট

ছবি: প্রথম আলো

আনুষ্ঠানিকভাবে আজ বুধবার কোরবানির হাটে পশু কেনাবেচার প্রথম দিন। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকার ও খামারিরা ইতিমধ্যে হাটে কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন। তবে কোরবানিদাতা কিংবা ক্রেতাদের উপস্থিতি তেমন একটা নেই। এ কারণে এখনো কোরবানির হাট জমে ওঠেনি।

আজ রাজধানীর গাবতলী হাটে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ক্রেতাদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। পাইকার ও খামারিরাও কেউ কেউ বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। কেউবা ব্যস্ত ছিলেন গবাদি পশুর যত্নআত্তি নিয়ে।

জামালপুরের মাদারগঞ্জের পাইকার আবুল কালাম। তিনি ১৭টি গরু নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার গাবতলীর হাটে এসেছেন। এখনো একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তাঁর আনা একেকটি গরুর ওজন ৩ থেকে ৭ মণ ওজনের।

আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ক্রেতা খুবই কম। যে কজন আসছেন, তাঁরাও শুধু দাম জানতে চাইছেন। দাম শুনে কিছু না বলেই চলে যাচ্ছে। কোনো কোনো ক্রেতা শুধু বাজার ঘুরে দেখছে বলেও তিনি জানান।

আবুল কালামের আনা ৩ মণ ওজনের একেকটি গরুর দাম ১ লাখ ৮০ হাজার আর ৭ মণ ওজনের একেকটি গরু ৩ লাখ টাকা দাম চাইছেন।

গাবতলীর হাটে মূল হাটের পাশাপাশি অস্থায়ী হাটের গরুর রাখার জন্য বাঁশ পুঁতে বালু ফেলে যে ভিট তৈরি করা হয়েছে, সেসব ভিটও এখনো পুরোপুরি গরু আসেনি। মূল হাট থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক ধরে উত্তর পাশে ঢাকা উত্তর সিটির যান্ত্রিক শাখার কার্যালয় পর্যন্ত হাটের ভিট তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ নম্বর হাসির ঘর পর্যন্ত মোটামুটি কোরবানি পশু ভরেছে। ৮, ৯ ও ১০ নম্বর হাসিলঘরের আসপাশে থাকা পশু রাখার ভিটগুলো এখনো ফাঁকা।

হাসিল আদায়ের দায়িত্বে থাকা সোলায়মান খান বলেন, হাটে এখনো ক্রেতা আসতে শুরু করেনি। যে কজন আসছেন, তাঁরা দরদাম যাচাই করছেন। খুব বেশি গরু বিক্রি হয়নি।

মিরপুর-২ নম্বর এলাকার বাসীন্দা রাফসান কবির ভাই আহসান কবীরকে নিয়ে হাট ঘুরে ঘুরে গরু পছন্দ করছিলেন। রাফসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই ভাই মিলে ঘুরে দেখছি কেমন গরু এসেছে। দামটাও যাচাই করছি। কাল (বৃহস্পতিবার) রাতে অথবা শুক্রবার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে হাটে এসে গরু কিনব।’ দামের বিষয়ে তিনি বলেন, ছোট গরুর দাম খুব একটা বেশি বলছেন না। তবে মাঝারি আর বড় আকারের গরুর জন্য বিক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেটা বেশি বেশি মনে হচ্ছে।

মূল হাটে ঢোকার মুখেই গরুর খাবারের জন্য আনা খড়ের ওপর কাত হয়ে জিরিয়ে নিচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আকমল মিয়া। তিনি ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে ১২টি গরু নিয়ে এসেছেন। তাঁর আনা গরুগুলোও তখন শুয়ে ছিল।

আকমল মিয়া বলেন, ‘আজকে ভোর রাতে এসে পৌঁছেছি। সকাল থেকে তেমন একটা ক্রেতা নেই। তাই নিজেও ঘুমাচ্ছি। গরুও বিশ্রাম নিচ্ছে।’ তাঁর আনা একেকটি গরুর ওজন ৫ থেকে ৯ মণ ওজনের। দাম আড়াই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাইছেন বলেও জানান তিনি।