জলবায়ু শরণার্থীদের পুনর্বাসন দাবি

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ কর্মসূচি পালন করছেন জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা
ছবি: তানভীর আহম্মেদ

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ শুক্রবার ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ কর্মসূচি পালন করছেন জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা। এ উপলক্ষে আজ সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে সেভ ফিউচার বাংলাদেশ ও ঢাকা জেলার ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ চেঞ্জ মেকার নামে দুটি সংগঠন।

এ সময় তারা দেশের জলবায়ু শরণার্থীদের টেকসই পুনর্বাসন, সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধানসহ বেশ কিছু দাবি জানায়।
সেভ ফিউচার বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক নয়ন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিয়মিত আন্দোলন চলছে। বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সুবিচারের দাবিতে গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক পালিত হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আমরা আজ প্রেসক্লাবের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি।’

সেভ ফিউচার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে হিমবাহ গলতে থাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। গবেষণা বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ২ কোটির বেশি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু হতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বাড়লে বাংলাদেশের ২০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে সংগঠনটি বলেছে, সবার সহযোগিতা ও সমন্বয়ে অভিযোজন প্রক্রিয়া বাড়াতে হবে। জলবায়ু শরণার্থীদের টেকসই পুনর্বাসন করতে হবে। সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধান করতে হবে। উপকূলজুড়ে টেকসই ব্লক বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে হবে। প্লাস্টিক ও বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া দেশের পাহাড়-টিলা, বনাঞ্চল, গাছপালা, বন্য প্রাণী ও নদী—সর্বোপরি পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা ও সংরক্ষণ করতে হবে।

এ সময় তারা বিশ্বনেতাদের কাছে দাবি জানায়, প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে নামিয়ে আনতে হবে। কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সবুজ জলবায়ু তহবিলে উন্নয়নশীল দেশের নেতারা যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ কর্মসূচি পালন করছেন জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা
ছবি: তানভীর আহম্মেদ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। তাই বিশ্বনেতাদের বাংলাদেশের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে মানববন্ধন থেকে।

ঢাকা জেলার ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ চেঞ্জ মেকারের সভাপতি সাদিয়া আফরোজ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে প্রকৃতির রূঢ় রূপ আমরা দেখতে পারছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ প্রকৃতির বিভিন্ন অসামঞ্জস্যতা জনজীবন ও প্রাণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বের মতো আমরাও আজ পালন করছি জলবায়ু অবরোধ আন্দোলন ‘ফ্রাইডে ফর ক্লাইমেট।’