ডিউটি ফাঁকি দিয়ে চাঁদাবাজিতে তাঁরা

শনির আখড়া এলাকায় বাস থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই মাঈন উদ্দিন
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে তিন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কর্মস্থল ছেড়ে বিভিন্ন পরিবহনে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২০ অক্টোবর শনির আখড়া পদচারী–সেতুর নিচে এ ঘটনা ঘটে।

ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী বিভাগের সহকারী টাউন উপপরিদর্শক (এটিএসআই) ও দুই কনস্টেবল গাড়ি থামিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছেন, এমন ছবি প্রথম আলোর হাতে আসে। অনুসন্ধান করে চাঁদাবাজির সত্যতা পাওয়া গেছে। চাঁদাবাজির বিষয়টি পুলিশের তদন্তেও বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা। তারপরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তাঁরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘটনার দিন এটিএসআই মো. মাঈন উদ্দিন, কনস্টেবল পলাশ মিয়া ও বোরহান উদ্দিনের ডিউটি ছিল যাত্রাবাড়ীর কাজলা ফাতেমানাজ ফিলিং স্টেশন এলাকায়। ওই দিন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু তাঁরা নিজেদের কর্মস্থল ছেড়ে সকাল সাতটার দিকে শনির আখড়া পদচারী–সেতুর নিচে গিয়ে অবস্থান নেন। সেখানে দাঁড়িয়ে ট্রাক, বাসসহ অন্তত সাতটি পরিবহনে তাঁরা চাঁদাবাজি করেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, তিন পুলিশ সদস্যের মধ্যে মাঈন উদ্দিন ঢাকা–সিলেট রুটের বাস ঢাকা মেট্রো ব ১৪–৩৪২৫ থেকে চাঁদা তোলেন। বোরহান উদ্দিন তিনটি গাড়ি থেকে চাঁদা তোলেন। পলাশ চাঁদা নেন দুটি গাড়ি থেকে। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ অনুযায়ী কোনো এটিএসআই, এএসআই ও কনস্টেবল যানবাহনের কাগজপত্র জব্দ বা যাচাই করে মামলা দিতে পারেন না। ডিউটি চলাকালে তাঁদের সঙ্গে মামলা করার কোনো পস মেশিন ও স্লিপ বই ছিল না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দিন চাঁদাবাজির শিকার এক ট্রাকচালক প্রথম আলোকে বলেন, রাস্তায় গাড়ি চালাতে গেলে পুলিশকে চাঁদা দিতেই হয়। গাড়ির কাগজপত্র ঠিক থাকলেও রেহাই নেই।

অভিযোগ প্রসঙ্গে এটিএসআই মাঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ ওই দিন আমার কাজলা এলাকায় ডিউটি ছিল। ডিউটি রেখে আমি শনির আখড়ায় গিয়ে কোনো পরিবহন থেকে টাকা নিইনি।’ তিনি বলেন, ‘আমি এখনো যাত্রাবাড়ী এলাকায় দায়িত্ব পালন করি।’

চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কনস্টেবল পলাশও। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরেক কনস্টেবল বোরহানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক আগের ঘটনা। এ ধরনের কোনো অভিযোগের বিষয় মনে পড়ছে না।’