‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে নামছে ১২০টি বাস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৮তম সভা। ৫ অক্টোবর
ছবি: সংগৃহীত

১২০টি বাস নিয়ে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে শুরু হচ্ছে বাস রুট রেশনালাইজেশনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ২১ কিমি দৈর্ঘ্যের প্রস্তাবিত এ রুটে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলক এ যাত্রা শুরু হবে। অবশ্য এর আগে দুই দফা বাস চলাচলে এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েও চালু হয়নি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৮তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি শেখ ফজলে নূর তাপস।
এর আগে মেয়র তাপস কমিটির ১৫তম সভায় জানিয়েছিলেন, এ রুটে দুটি প্রতিষ্ঠানের বাস চলছে। সব মিলিয়ে ১৫৫টি বাস এ রুটে চলাচল করছে। তাঁরা যে যৌথ মূলধনি চুক্তি করবেন, তাতে এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

ঢাকার গণপরিবহনের মালিক দুই হাজারের বেশি। আর ঢাকা ও আশপাশে দুই শতাধিক পথে (রুট) বাস চলাচল করে। যাত্রী তোলার জন্য এক বাসের চালক অন্য বাসের সঙ্গে পাল্লায় লিপ্ত হন। এতে দুর্ঘটনা বাড়ে। এ ব্যবস্থা পরিবর্তনে ২০০৪ সালে ঢাকার জন্য করা ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ বা বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ এ ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় বাস তুলে নেওয়া। সহজ শর্তের ঋণে নতুন বাস নামানো। বাস চলবে পাঁচ-ছয়টি কোম্পানির অধীন। মালিকেরা বিনিয়োগের হার অনুসারে লভ্যাংশ পাবেন।

আরও পড়ুন

পরীক্ষামূলক নতুন রুটে কোনো পুরোনো বাস থাকবে না জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে পুরোনো বাস চলবে না। এখন এ রুটে যে বাসগুলো চলছে, সেগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারির পর কেনা বাস থাকবে। বাকি বাসগুলো উঠিয়ে নেওয়া হবে। এর সঙ্গে নতুন বাস যোগ হবে। সব মিলিয়ে এ রুটে ১২০টি বাস চলাচল করবে। এ প্রস্তাবে পরিবহনমালিকসহ সবারই সম্মতি রয়েছে।’
এ জন্য যাবতীয় কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেন, ‘বাকি যে সময় আছে, এর মধ্যে বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করে ১ ডিসেম্বর আমরা এ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করব।’

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ রুটে চলাচলকারী পরিবহনের ড্রাইভার ও হেলপারের একটি নির্দিষ্ট পোশাক থাকবে। আগামী ২০ তারিখে এ রুটে চলাচলকারী বাসের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হবে। আমরা মনে করি, পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে।’

বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৮তম সভায় ঢাকার দুই সিটি মেয়র
ছবি: সংগৃহীত

উত্তর সিটির মেয়র আরও বলেন, ‘নতুন এ রুটে ৪০টির বেশি যাত্রীছাউনি করা হবে। বাস বে হবে ১৬টি। জায়গাসংকটের কারণে বাস বের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া এ রুটের বাসগুলোর রং কী হবে, তা ১৪ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বলা হয়েছে। পরে ২০ অক্টোবর বাসের রং নির্ধারণ করা হবে।’

সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ এস এম সালেহ উদ্দিনসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।