ঢাকায় গাড়ি চলাচল আজ আরও বেড়েছে

ঢাকার প্রবেশপথে অস্থায়ী চেকপোস্টে চলছে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ। গাবতলী, ঢাকা, ২৮ জুলাই।
ছবি: আশরাফুল আলম

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৪ দিনের কঠোরতম বিধিনিষেধের ষষ্ঠ দিন আজ বুধবার। গত পাঁচ দিনের চেয়ে আজ রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে বেড়েছে মানুষ ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল। আর পাড়া-মহল্লার অলিগলিতেও মানুষের আনাগোনা বেড়েছে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর বাড্ডার ইউলুপ এলাকায় সরেজমিনে হিসাব করে দেখা গেল, প্রতি মিনিটে ৩৬টি ব্যক্তিগত গাড়ি, ১৪টি পণ্যবাহী যানবাহন ও অসংখ্য রিকশা চলাচল করছে। পাশাপাশি হেঁটে চলাচল করছে মানুষ। অধিকাংশের মুখেই মাস্ক নেই।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা বলছেন, সড়কে লোকজন ও যানবাহনের চাপ এতটাই যে সবাইকে ধরে ধরে বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।

তবে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বলছেন, তাঁরা যাদের যাদের থামাচ্ছেন, তাদের মধ্যে কেউ বাইরে বের হওয়ার যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারলে অপরাধের মাত্রা বুঝে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।

ঢাকার সড়কে যারা বের হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে পুলিশকে। যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারা লোকজনকে জরিমানা করতে দেখা গেছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা, স্বাস্থ্যবিধি না মানা, মাস্ক না পরা, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করার দায়ে অনেকে জরিমানা গুনছে। আবার অনেকে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে ছাড় পাচ্ছে। বিধিনিষেধ মানাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল ও মাইকিং করতে দেখা গেছে।

বাড্ডার ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত পাঁচ দিনের তুলনায় আজ সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। যাতায়াতকারীরা করোনা পরীক্ষা, রোগী দেখতে যাওয়া, বিদেশযাত্রা, অফিসে যাওয়াসহ নানা জরুরি কারণ দেখাচ্ছেন। সকাল থেকে বিভিন্ন অপরাধে ১০ জনকে ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আজ সকালে রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা এলাকার সড়কে তুলনামূলক বেশি ব্যক্তিগত গাড়ি, খাদ্যসামগ্রী বহনকারী যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। এসব সড়কের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পুলিশের তল্লাশিচৌকি।

সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বেশির ভাগ লোকজন রিকশায় করে যাতায়াত করছে। রিকশা না পেয়ে অনেককে হেঁটেও গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

এদিকে রিকশাচালকেরা যাত্রীদের কাছ থেকে দুই থেকে তিন গুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।

মিরপুর ৬ থেকে বনানীর কর্মস্থলে যাতায়াত করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান। তিনি জানান, আজ সকালে রিকশায় করে অফিসে পৌঁছাতে তাঁর প্রায় ২০০ টাকা খরচ হয়েছে, যা তাঁর কাছে অনেক বেশি মনে হয়েছে। এই পথে বাসে যেতে ৩০ টাকা লাগে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করছেন। অনেকের মুখেই মাস্ক নেই।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। পরে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোরতম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার ৫৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৩৬ জনকে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ টাকা জরিমানা করেছেন। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন আইন ও বিধি লঙ্ঘন করায় ৪৯৭টি গাড়িকে ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।