তথ্য গোপন করে জামিন আবেদন, চার মাসের নিষেধাজ্ঞা

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

এক মামলায় একাধিক জামিন আবেদন নিয়ে তথ্য গোপন করায় ফেঁসে গেলেন এক আসামি। দেশের কোনো আদালতে তাঁর জামিন আবেদন করার ওপর চার মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন। তথ্য গোপনের বিষয়টি নজরে আসার প্রেক্ষাপটে জামিন চেয়ে ওই আসামির করা পৃথক আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে এই আদেশ দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম ডাক বিভাগের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সহকারী পোস্টমাস্টার (সঞ্চয়-৬) নূর মোহাম্মদ নামের ওই আসামি বর্তমানে কারাগারে আছেন। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে।

আদালত বলেছেন, ‘একটি রুল (জামিন প্রশ্নে) বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আরেকটি আবেদন (জামিন) কীভাবে করে? এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। একই বিষয়ে আবেদন বিভিন্ন কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে দেওয়া রুল প্রত্যাহার করে জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করা হলো। অপর রুলও খারিজ করা হলো। আবেদনকারী (নূর মোহাম্মদ) আগামী চার মাস উচ্চ বা নিম্ন আদালত কোথাও জামিনের আবেদন করতে পারবেন না।’

আইনজীবীদের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আপনার ক্লায়েন্ট খুব স্মার্ট। তদবিরকারককে এবারের মতো ক্ষমা করে দেওয়া হলো। তবে তাঁকে সতর্ক করে দেবেন। বেশি স্মার্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই।’

আইনজীবীর তথ্যমতে, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ২১ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রামের সমন্বিত কার্যালয়ে ওই মামলাটি করা হয়। এ মামলায় নূর মোহাম্মদ হাইকোর্টে জামিন চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর জামিন প্রশ্নে রুল হয়। এই তথ্য গোপন করে ওই মামলায় হাইকোর্টের একই বেঞ্চে আবার জামিনের আবেদন করেন নূর মোহাম্মদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২১ জানুয়ারি নূর মোহাম্মদের জামিন প্রশ্নে রুল হয়। বিষয়টি নজরে এলে নূর মোহাম্মদের করা আবেদন দুটি আজ আদালতের কার্যতালিকায় আদেশের জন্য ওঠে।

আদালতে জামিন আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী এ এস এম মোক্তার কবির খান ও অনীক আর হক শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে আইনজীবী আলমগীর পারভেজ শুনানিতে ছিলেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‌‘ওই মামলায় একই বেঞ্চ থেকে নূর মোহাম্মদ গত ১০ ডিসেম্বর জামিন প্রশ্নে রুল নেন। রুল শুনানির দিন ধার্যের জন্য ২১ জানুয়ারি বিষয়টি তালিকায় ছিল। রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় নূর মোহাম্মদের জামিন জন্য আইনজীবী মোক্তার কবির খানের করা অপর জামিন আবেদন সেদিন কার্যতালিকায় ছিল। একই মামলায় দ্বিতীয় দফায় করা জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ জানুয়ারি রুল হয়। নথি পর্যালোচনা করে বিষয়টি জেনে তা আদালতের নজরে আনা হলে হাইকোর্ট আবেদন দুটি খারিজ করে এই আদেশ দেন। আবেদন খারিজ হওয়ায় নূর মোহাম্মদকে কারাগারেই থাকতে হবে।’