দাম বেড়েছে গরুর মাংসের

মোহাম্মদপুরের কাটাসুর বাজারে মাংসের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়
ছবি: মিজানুর রহমান

পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বিক্রির পরিমাণ বেশি হলেও রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাটাসুর বাজারে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। আজ শুক্রবার ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। ব্যবসায়ীরা জানান, আগে এই দিনে ১০ থেকে ১৫টি গরু বিক্রি হতো। করোনার পর এই সংখ্যা তিন থেকে চারে নামিয়ে এনেছেন ব্যবসায়ীরা।

কাটাসুর বাজারে গরুর মাংসের চারটি দোকান রয়েছে। এ ছাড়া এখানকার মাছের বাজারের কর্নারে গরুর মাথা, কলিজা, ফুসফুস ও মগজ বিক্রি করার দুটি দোকান রয়েছে।

মেসার্স মহসিন বিফ শপের মালিক মহসিন উদ্দিন বলেন, দুই দিন আগে গরুর মাংস কেজি ছিল ৬০০ টাকা। চাহিদা বাড়লে এখানে দাম কিছুটা বাড়ে। প্রথমে ৩০ টাকা, পরে ৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। তবে পাইকারি হিসাবে ৫৮০ টাকা কেজি দরে এখনো গরুর মাংস বিক্রি করেন মহসিন।

এই দোকানে দাঁড়িয়ে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আয়নাল হোসেনের সঙ্গে। শবে বরাত উপলক্ষে আত্মীয়দের দাওয়াত দেওয়ায় বেশি মাংস কিনতে হচ্ছে তাঁকে। পাঁচ কেজি মাংস কিনতে তাঁর ২৫০ টাকা বেশি খরচ হওয়ায় চটেছেন দোকানদারের ওপর। তাতে অবশ্য দোকানদারের কোনো বিকার নেই।

আল মদিনা মাংস বিতানের মালিক মো. মুরাদ বলেন, আগে কম পরিমাণে মাংস কিনতে আসা ক্রেতার সংখ্যা এত বেশি ছিল না। তবে এখন এ সংখ্যা বেড়েছে। অনেকে লজ্জায় আসে না। এ দোকানে আধা কেজির কম মাংসও বিক্রি হয় বলে জানান এই দোকানি।

জনপ্রিয় মাংস বিতানে আধা কেজি মাংস কিনতে এসেছেন এই বাজারেই পাহারাদারের চাকরি করা হেজু মিয়া। তিনি বলেন, ‘গত কোরবানির ঈদে (ঈদুল আজহা) মাংস উপহার পেয়েছিলাম। এর পর আর খাইনি। বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে আধা কেজি নিচ্ছি।’

স্ত্রী ও দুই ছেলে–মেয়ে মিলে চারজনের সংসার হেজু মিয়ার।

বাজারের ভেতর একটি মাংসের দোকান আছে। বাজারের বাইরের দোকানগুলোয় ৬৫০ টাকা কেজি হলেও নামবিহীন এই দোকানে ৬৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। এই দোকানের বিক্রয়কর্মী মো. সুজন বলেন, ‘আমাদের দোকানের মাংসে পানি নেই। ওজনেও সঠিক পাবেন। তাই সব সময়ই আমরা কেজিতে ১০ টাকা বেশি রাখি।’

বাজারের ভেতরের মাথা, কলিজা বিক্রি করার দোকানগুলোয় একটু ভিড় বেশি দেখা গেল। বাইরের দোকান থেকে এক কেজি মাংস কিনে আয়েশা এখানে এসেছেন কলিজা কিনতে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাংসের সঙ্গে কলিজা মিলিয়ে রান্না করবেন। পরিবারে সদস্যসংখ্যা বেশি হওয়ায় এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হচ্ছে তাঁকে। আয়েশা গৃহপরিচারিকা কাজ করেন।

এই দোকানে মগজ প্রতি পিস ২০০ টাকা, ফুসফুস-মাথা মিলিয়ে কেজি ৩৫০ টাকা ও কলিজার কেজি ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেসরকারি হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সুমি বললেন, অন্য দিনের চেয়ে এখানেও কেজিতে ৫০ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে।