দ্বিতীয় দিনে ৯ মামলা, জরিমানা দেড় লাখের বেশি

এডিস মশা নিধনে পরিচালিত ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অভিযানের দ্বিতীয় দিন বুধবার বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা থাকায় ৯টি মামলা করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনাকারী ভ্রাম্যমাণ আদালতের সদস্যরা ওই সব বাসাবাড়ির মালিক ও নির্মাণাধীন ভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের আর্থিক দণ্ড প্রদান করে ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় মোহাম্মদপুরে ডিএনসিসির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডটির বিজলি মহল্লা, জান্নাতবাগ ও টিক্কাপাড়া এলাকায় অভিযান ও ওষুধ ছিটানোর কাজ করছেন মশক কর্মীরা। ওয়ার্ডটিতে নিয়োজিত ১২ জন মশক কর্মী ওই তিন এলাকার ১১টি সড়কে ভাগ হয়ে মশার লার্ভা নিধনের ওষুধ ছিটান। শুধু একজন মশক কর্মী মো. সিরাজুল ইসলাম অসুস্থতার কারণে কাজে যাননি।

বিজলি মহল্লা এলাকায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ‘এনএইচএ গার্ডেন সিটি’ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সারি সারি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণাধীন ভবনগুলোর পাশে, দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা জায়গায় ও ভবনের পেছনের নালায় পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। পরে অভিযানের অংশ হিসেবে জমা পানিতে মশার লার্ভা আছে কি না যাচাই করেন মশক কর্মীরা। তবে মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি। আগাম সতর্কতা হিসেবে জমা পানিতে ওষুধ ছিটিয়ে দেন কর্মীরা।

গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ওই প্রকল্প এলাকায় কয়েকটি ভবনের নির্মাণকাজ করা একটি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার হাফিজুল খান প্রথম আলোকে বলেন, এডিস মশা নিয়ে আমরা নিজেরাও সতর্ক আছি। কারণ এখানে দিনভর থাকি, কাজ করি। আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আমাদেরই বেশি।

তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রমে কিছুটা কাজ হচ্ছে। আগের চেয়ে মশার অত্যাচার কমেছে। তবে পুরোপুরি না।

মশক কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছে কি না, সেসব তদারকি করছিলেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সচিব ইফতেখার ইসলাম। বেলা ১১টার দিকে ওয়ার্ডটির জান্নাতবাগ এলাকায় দেখা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, এই এলাকার বাসিন্দা স্থানীয়। এডিস মশার ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সচেতন। মশক কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছেন কিনা, তা এলাকার বাসিন্দারাই তদারকি করেন। এ ছাড়া ৪০০/৪০০ গজ এলাকায় তদারকির কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকেরা সব সময় মাঠে থেকে মশক কর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন পাশাপাশি বাসিন্দারেও সচেতন করছেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিশেষ অভিযানে উত্তরা এলাকার ১, ৩ ও ৫ নম্বর সেক্টর ও খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬টি মামলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের নূরেরচালা ও খিলবাড়িরটেক এলাকায় ৩টি মামলায় ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ১০ অঞ্চলেই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অনেক এলাকার বিভিন্ন স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ (জমা পানি) পাওয়া যাচ্ছে। মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী মামলা ও জরিমানার পরিবর্তে সচেতনতা তৈরিতে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ এই ১০ দিনের কর্মসূচির পরে কোথাও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।