
রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা বাজার থেকে জনতা হাউজিং মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের কোথাও পিচের অস্তিত্ব নেই। শুষ্ক মৌসুমে ধুলা আর বর্ষায় কাদা-পানির দৌরাত্ম্যে এই সড়ক দিয়ে পায়ে চলা দায়। তার ওপর বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা খানাখন্দের কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও এলাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, বছরের পর বছর সড়কটি এমন বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও এটি সংস্কারের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অথচ এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে দুটি কাঁচাবাজারসহ অন্তত চারটি বিপণিবিতান। তালতলা বাজার থেকে মোল্লাপাড়া, পীরেরবাগ, শ্যামলী ও কল্যাণপুর যাওয়ার সহজ রাস্তাও এটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, কিছুক্ষণ আগে হওয়া বৃষ্টির কারণে গোটা সড়কটি কর্দমাক্ত হয়ে আছে। জায়গায় জায়গায় জমে আছে পানি। পথচারীরা ওই কাদা-পানি এড়িয়ে কোনোভাবে সড়কের এক পাশ দিয়ে চলার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যেই ওই পথ দিয়ে যাওয়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেট কার পথচারীদের গায়ে খানাখন্দে জমে থাকা কাদা-পানি ছিটিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করছে।
এ বিষয়ে কথা হলো তালতলা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সোহেলের সঙ্গে। খানিকটা ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বললেন, ‘শুকনাকালে একহাঁটু ধুলা আর বর্ষায় কাদা। আমরা কই যামু কন? তালতলা বাজারে ব্যবসা করি। এই পথ দিয়া চলাচল না কইরা তো উপায় নাই।’
তালতলা বাজার থেকে খানিকটা এগিয়ে তাবাসসুম মার্কেটের সামনে আখতার হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানালেন, তিনি এই এলাকায় ২৫ বছর ধরে বাস করছেন। এর মধ্যে কখনোই সড়কটির খুব ভালো অবস্থা তিনি দেখেননি। তিনি বলেন, ‘বছরপাঁচেক আগে একবার রাস্তায় আরসিসি ঢালাই দেওয়া হইছিল। ওইটা টিক্কা (টিকে) ছিল মাত্র দুই দিন। এক বৃষ্টিতেই সব শ্যাষ।’
সড়কের শেষ মাথায় জনতা হাউজিংয়ের কাছে একটি বহুতল ভবনে বসবাস করেন ব্যবসায়ী শরিফুল মৃধা। সড়কের বেহাল অবস্থা নিয়ে কথা বলতে চাইলে বেশ বিরক্তির স্বরে তিনি বলেন, ‘এক সমস্যার কথা বারবার বলতে ভালো লাগে না। এই রাস্তা দিয়ে পরিষ্কার জামা-কাপড় পরে চলাচল করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’
সাইফুল হক নামের আরেক ব্যক্তি বললেন, ‘এই রাস্তা পড়ছে পশ্চিম কাফরুলের মধ্যে। পূর্ব কাফরুলে ভোটার বেশি। তাই এই দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ কোনো কাউন্সিলরের হয় নাই।’
এই সড়কটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে জনদুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি জানি সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ওই এলাকার লোকজন অনেক দিন ধরেই অসুবিধার মধ্যে আছেন। সম্প্রতি সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে একটা বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জুলাই মাসেই এ জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। আগস্টের মধ্যে যেন কাজ শুরু করা যায়, সে জন্য জোর চেষ্টা করা হবে।’