নারী অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ আ.লীগ ও বিএনপি

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এবি পার্টির এক আলোচনা সভার আয়োজন করে
ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতি দেশকে হতাশ করেছে। একই সঙ্গে দল দুটির রাজনীতি নারীদের অধিকার রক্ষায়ও ব্যর্থ হয়েছে। এমনটাই মনে করছেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এবি পার্টির এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

দিলারা চৌধুরী আরও বলেন, নারীর অবদান ও অন্তর্ভুক্তি ছাড়া সমাজ সম্পূর্ণ হতে পারে না। ধর্ষণের বিরুদ্ধে দেশে কঠোর আইন করা হয়েছে। কিন্তু ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিরা রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বিচার পাচ্ছে না। জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া নারী অধিকার কিংবা নাগরিক অধিকার কোনোটিই অর্জন সম্ভব নয়।
জাতীয় সংসদে সাগর-রুনি হত্যার বিচার নিয়ে একটা অধিবেশন হওয়া দরকার বলেও এ সময় অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।

আলোচনা সভায় গণফোরামের সাবেক মহাসচিব রেজা কিবরিয়া বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের স্বার্থ নিয়ে চিন্তিত থাকে। আর অগণতান্ত্রিক সরকারের ভয়ে জনগণ তটস্থ থাকে। অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। বর্তমান সরকার দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা—সব শেষ করে দিয়েছে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করতে অন্তত ২০ বছর সময় লাগবে।

সাবেক সাংসদ নিলুফার চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে একটি বিষয় গর্বের যে পুরুষেরা আমাদের পাশে আছে। অন্যদিকে কষ্ট পাই এ জন্য যে আপনারা এখনো আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারেননি। যে নারী দিবস আমাদের আজও সম্ভ্রম দিতে পারেনি, সে নারী দিবস আমরা চাই না।’

কলামিস্ট গৌতম দাস প্রশ্ন রাখেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র কি অধিকারভিত্তিক?’ এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশ ও রাষ্ট্রের ধারণা পেয়েছি ইউরোপ থেকে। এখানে জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র ও অধিকারবাদী রাষ্ট্রের ধারণার মধ্যে তফাত আছে। সর্বাধুনিক রাষ্ট্রের ধারণা হলো অধিকারবাদী রাষ্ট্র। এখান থেকেই তৈরি হয় নাগরিক ধারণার পূর্ণতা। আজকে নারীরাও যদি একই ধারণা ধারণ করেন, তবে তাঁরা তাঁদের অধিকার অর্জনে সাম্যতা পাবেন।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আজও ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলতে হয়, নারী অধিকার চাইতে হয়। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার।’

এবি পার্টি ঢাকা মহানগরীর (উত্তর) নেতা রাজিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলটির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক, মুক্তিযোদ্ধা শওকত আরমান, অভিনেত্রী আরজুমান্দ আরা, মানবাধিকারকর্মী আফরোজা ইসলাম, শ্রমিকনেতা বেবী পাঠান, আইনজীবী নাসরিন সুলতানা প্রমুখ।