পরীমনির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

পরীমনি
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলা হওয়ার দুই মাসের মাথায় আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

মামলার অপর দুই অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হলেন আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেন। দুজনই পরীমনির পরিচিত ব্যক্তি।

প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।

রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে গত ৪ আগস্ট অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদসহ পরীমনি, আশরাফুল ইসলামকে আটক করে র‍্যাব। এ ঘটনায় র‍্যাব পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গুলশান থানায় মামলা করে। পরীমনির বাসা থেকে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, ৪ গ্রাম আইস উদ্ধার হয় বলে র‍্যাব মামলায় উল্লেখ করে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, পরীমনির বাসা থেকে জব্দ করা আলামতগুলোর রাসায়নিক পরীক্ষায় মাদকের উপস্থিতি মিলেছে। এ জন্য পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত প্রথম আলোকে বলেন, পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি এখনো তাঁর জানা নেই।
গত ৩১ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া পর্যন্ত পরীমনির অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছিলেন।

পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, ‘আগামী ১০ অক্টোবর এই মামলার শুনানির জন্য দিন ঠিক রয়েছে। অভিযোগপত্র দেওয়া হলে, সেদিন পরীমনির জামিন চেয়ে আবেদন করা হবে।’

পরীমনিকে তিন দফায় মোট সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিআইডি।

পরীমনির বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী হলেন র‌্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান। মামলায় মজিবরের অভিযোগ, ৪ আগস্ট তিনিসহ র‌্যাব-১-এর সদস্যরা গুলশান-১ গোলচত্বরে অবস্থান করছিলেন। বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, বনানীর একটি বাসায় পরীমনি সহযোগী আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে বিদেশি মদ সংগ্রহ করে নিজের বাসায় মজুত রেখেছেন। তাঁরা বাসায় অবস্থান করছেন। পরে বাসার পঞ্চম তলায় অভিযান চালিয়ে পরীমনির শয়নকক্ষ থেকে নারী র‌্যাব সদস্যদের সহায়তায় তাঁকে আটক করা হয়। পরীমনির দেখানো মতে শয়নকক্ষের একটি কাঠের ফ্রেমের ভেতর থেকে বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। এ ছাড়া শয়নকক্ষ থেকে একটি সাদা জিপারে রাখা চার গ্রাম আইস বা ক্রিস্টালমেথ জব্দ করা হয়। আরও জব্দ করা হয় এক ব্লট এলএসডি মাদক।

চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকের মোট দাম দেখানো হয়েছে দুই লাখ সাত হাজার টাকা।

মামলায় বলা হয়, পরীমনি এসব মদ কবির নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রাখতেন। একই মামলায় আবার র‌্যাব দাবি করেছে, চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের কাছ থেকে মদ সংগ্রহ করতেন। তবে পরীমনি ও আশরাফুল ইসলামের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেছেন, র‌্যাব বাসায় মদ পাওয়ার অভিযোগে যে মামলা করেছে, তা সঠিক নয়।