পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কর্মীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ নেই: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ নেই বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ট্রেড ইউনিয়ন করতে পৃথকভাবে করা দুটি রিট (রুল ডিসচার্জ) খারিজ করে এ রায় দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ট্রেড ইউনিয়ন করতে নির্দেশনা চেয়ে ছয় বছর আগে পৃথক দুটি রিট করা হয়েছিল। যার ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার এ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, প্রবীর নিয়োগী ও আনিতা গাজী রহমান। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রেজা-ই-রাব্বী খন্দকার ও মেহেরুন্নেছা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।  

আইনজীবী রেজা-ই-রাব্বী খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ নেই বলে রায় দিয়েছেন আদালত। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে ট্রেড ইউনিয়নের কথা আছে। তবে শর্তসাপেক্ষে এ অধিকার নিশ্চিত হবে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইনের ৩১ ধারায় আছে দোকান, বাণিজ্য ও শিল্প হিসেবে আরইবিকে গণ্য করা যাবে না। এই বিধান অনুসারে কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করতে হলে প্রতিষ্ঠানের ধরন ও যে লাভজনক বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়—পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও সমিতি ওই সংজ্ঞায় পড়ে না। এসব দিক বিবেচনায় রিট দুটি খারিজ হয়েছে।  

আইনজীবীদের দেওয়া তথ্যমতে, ট্রেড ইউনিয়ন করতে পল্লী বিদ্যুৎ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ও পল্লী বিদ্যুৎ শ্রমিক-কর্মচারী লীগ ২০১৪ সালে শ্রম পরিদপ্তরে পৃথক আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম পরিদপ্তর থেকে বলা হয়, ২০১৩ সালের পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইনের ৩১ ধারা অনুসারে শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ নেই। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে আবেদন করা হলে তা মঞ্জুর হয়।

শ্রম আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। আপিল ট্রাইব্যুনাল শ্রম আদালতের সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে পৃথক রিট হয়। পল্লী বিদ্যুতায়ন শ্রমিক-কর্মচারী লীগের প্রস্তাবিত সভাপতি এনামুল হকসহ অন্যরা এবং পল্লী বিদ্যুৎ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন পৃথক রিট করে। পৃথক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ২৫ ও ৩০ মার্চ পৃথক রুল হয়।