পেশা বদলে তাঁরা এখন মলম পার্টির সদস্য

মলম পার্টির সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)
ছবি: সংগৃহীত

কেউ দোকানের কর্মচারী, কেউবা ছিলেন পেশায় ফটোগ্রাফার। করোনা পরিস্থিতিতে আয় কমে যাওয়ায় তাঁরা অপরাধে জড়ান। তাঁরা বাসের যাত্রীদের লক্ষ্য করে তৎপরতা চালাতেন, যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ও মালামালের ভাগ দিতেন বাস কন্ডাক্টরকে। গতকাল বুধবার আবদুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ রোডের শিকদার এন্টারপ্রাইজের সামনে থেকে এই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁদের কাছ থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট কৌটাভর্তি মলম, ছোট একটি প্লাস্টিকের কৌটায় টাইগার বাম–জাতীয় মলম, একটি স্টিলের ছোট কাঁচি, এক পাতা ১০টি ঘুমের বড়ি জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মলম পার্টি চক্রের মূল হোতা স্বপন (৫২), ফিরোজ (৪০), মাসুদ রানা (৫১), শহীদুল ইসলাম (৫১), জাকির হোসেন (৫৫), শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল (৩৩) ও হাবিবুর রহমান ওরফে সিরাজ মুন্সী (৫০)।

চক্রে এমনও সদস্য আছেন, যিনি আগে দোকানের কর্মচারী ছিলেন, কেউবা ফটোগ্রাফার ছিলেন। তাঁরা কম পরিশ্রমে বেশি টাকা আয় করার লোভে মলম পার্টির সদস্য হন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতি. ডিআইজি) শেখ ওমর ফারুক। তিনি জানান, গ্রেপ্তার মলম পার্টির সদস্যরা বিভিন্ন পেশায় ছিলেন। কিন্তু করোনায় তাঁদের আয় কমে যায়। বেশি টাকা আয় করতে তাঁরা মলম পার্টির সদস্য হন। তিনি বলেন,অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা কেউ ১৪ বছর, কেউ এক-দুই মাস ধরে কাজ করছেন। চক্রে এমনও সদস্য আছেন, যিনি আগে দোকানের কর্মচারী ছিলেন, কেউবা ফটোগ্রাফার ছিলেন। তাঁরা কম পরিশ্রমে বেশি টাকা আয় করার লোভে মলম পার্টির সদস্য হন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

মলম পার্টির সদস্যরা এক হয়ে কৌশলে বাসের সরল যাত্রীদের টার্গেট করে চেতনানাশক ওষুধ ও মলম প্রয়োগ করে টাকাসহ মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেন। চক্রটি ছিনতাই করতে বের হওয়ার আগে নিজেদের মধ্যে কৌশল নির্ধারণ করত, জায়গা আগে থেকে পর্যবেক্ষণ করত। তাঁরা বাসের কন্ডাক্টরের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করে সেই বাসে উঠতেন। যাত্রীদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া টাকার ভাগ কন্ডাক্টরকে দেওয়া হতো।

পাঁচটি চোরাই অটোরিকশা ও জাল কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির কর্মকর্তা শেখ ওমর ফারুক বলেন, ‘মলম পার্টির সংখ্যা কত, এমন পরিসংখ্যান এ মুহূর্তে আমার কাছে নেই। তবে আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করব।’

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার খালিদুল হক হাওলাদার, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-গণমাধ্যম) জিসানুল হক উপস্থিত ছিলেন।

অটোরিকশা চোর গ্রেপ্তার

চোরাই সিএনজিচালিত অটোরিকশার জাল রেজিস্ট্রেশন ও নম্বর প্লেট তৈরি করে তা বিক্রি করার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। বুধবার সকালে পৌনে সাতটার দিকে রাজধানীর দোলাইরপাড়ে শাহ আলমের গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে মো. শাহ আলম ও মো. জামাল উদ্দিন নামের দুই চোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি চোরাই অটোরিকশা ও জাল কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তাঁদের সহযোগীদের দিয়ে সিএনজি চুরি করিয়ে তাতে ভুয়া নম্বর প্লেট লাগাতেন। এরপর এতে নতুন রং লাগিয়ে বিক্রি করতেন। এই চক্র ২ মাসে ১৫ থেকে ২৯টি সিএনজি কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চুর করেছে। তাঁদের ব্যবহৃত নম্বর প্লেটগুলো বিআরটিএর নম্বর নয়। সেগুলো ভুয়া।

সিআইডির কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, ‘আমাদের পাওয়া তথ্যমতে, চক্রটি বেশ শক্তিশালী ও সক্রিয়। বর্তমান বাজারে সিএনজির দাম চড়া হওয়ায় এর চাহিদা অনেক বেশি। ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করে ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ করার সম্ভাবনা রয়েছে।’