প্রকাশকদের বৃহস্পতি ছিল তুঙ্গে
বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান মেলায় হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন একাই। কেমন লাগছে মেলা—এ প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘ভালো। বেশ পরিচ্ছন্ন মেলা। মেলার পরিসরটা একটু বেশি বড় হয়ে গেছে। আরেকটু ছোট, আরেকটু গোছানো হলে ভালো হতো। কলকাতার বইমেলায় মানুষ আসে, তরুণেরা আড্ডা দেয়, খাওয়াদাওয়া চলে। কিন্তু বই বিক্রি হয় কম। আমাদের বইমেলায় মানুষ বই কেনে।’
ভাষাচিত্রের স্টলের সামনে দাঁড়িয়েছিল মেয়েটা। হলুদ পোশাকের এই বালিকার হাতে বেশ কয়েকটি ফুলের মুকুট।
‘ঢুকলা ক্যামনে?’
‘এমনিই লাইনে দাঁড়াইয়া ঢুইক্যা গেছি।’
এর আগে কদিন খুব কড়াকড়ি ছিল। ফুলের মুকুট বিক্রি করতে দেয়নি একদম। গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে ওদের।
‘নাম কী তোমার?’
‘জয়া।’
‘বিক্রি হইছে একটাও?’
ওপর–নিচ মাথা দোলায় জয়া।
‘তোমার একটা ছবি তুলি?’
‘না।’
‘ক্যান তুলতে চাও না? আমি এর আগে রাবেয়া, সুমাইয়ার ছবি তুলছি।’
‘আইচ্চা তোলেন, কিন্তু ফেসবুকে দিয়েন না।’
‘ক্যান, ফেসবুকে দিলে কী হইব?’
‘পুলিশ যদি আমারে এইখানে ফুল বেচতে দ্যাখে, তাইলে আর ঢুকতে দিব না।’
জয়ার কথায় যুক্তি আছে।
অনুপম প্রকাশনী থেকে ফারহানা নিশাত কিনছিলেন জহির রায়হানের আরেক ফাল্গুন। তিনি জানালেন, এবার মেলায় ঘুরে ঘুরে বই কিনতে ভালো লাগছে। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মিলননাথ বললেন, প্রতিবারের মতো এবারও ২২ ফেব্রুয়ারি মূল বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এটা চলবে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ বছর বই একটু কম বিক্রি হচ্ছে। এর একটা বড় কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, মিরপুর থেকে একেবারে গুলিস্তান পর্যন্ত রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, তাতে পরিবার নিয়ে অনেকেই আসতে পারছেন না। এর প্রভাব পড়েছে মেলায়।
প্রতিবছরের মতো এবারও হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ করা হলো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের তথ্যকেন্দ্রের সামনে। আয়োজক ছিল লেখক-পাঠক-প্রকাশক ফোরাম।
আজ আগামী থেকে এসেছে ড. মো. জহুরুল ইসলামের বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি, কথাপ্রকাশ থেকে এসেছে বেলায়াত হোসেন মামুনের সিনেয়াস্টের ডায়েরি, কবিতাচর্চা থেকে এসেছে রাসেল আশেকীর একটি ভাষণ, একটি দেশ।
প্রথমার প্যাভিলিয়নে আনিসুল হক এবং অন্যধারার স্টলে সাদাত হোসাইন অটোগ্রাফ দিয়েই যাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার মেলায় প্রকাশকদের বৃহস্পতি ছিল তুঙ্গে।