প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজন রিমান্ডে

প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

দোকানে টাকা বিকাশ করার কথা বলে লেনদেন করা বিকাশ হিসাবের খাতার ছবি তুলে নেয় প্রতারক চক্রের সদস্যরা। তারা বিকাশ এজেন্ট সেজে ওই নম্বরগুলোতে কল করে গ্রাহকের কাছে জানতে চায়, পাঠানো টাকা পেয়েছেন কি না এবং ক্যাশ আউট করেছেন কি না। ‘না’ সূচক জবাব পেলে পরে চক্রের আরেক সদস্য নিজেকে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কথার ছলে কৌশলে ওটিপি এবং পিন কোড নিয়ে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্টের টাকা হাতিয়ে নেয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তাঁরা হলেন শিমুল মিয়া (২৯), শাহিন মাতবর (২৮) ও মো. মহিদুল (২৬)। এই তিনজন ওই প্রতারক চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ডিবির ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মো. আ. আহাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিকাশ প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রধানত চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতারণা করছিল। প্রথম গ্রুপ মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন বিকাশের দোকানে টাকা বিকাশ করার কথা বলে লেনদেন করা বিকাশ খাতার ছবি তুলে নেয়। পরে সেই ছবি তারা হোয়াটসঅ্যাপে দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে স্থান উল্লেখ করে পাঠিয়ে দেয়। দ্বিতীয় গ্রুপ সেসব নম্বরে বিকাশ দোকানদার সেজে কল করে এবং জানতে চায় যে তাদের কাছে পাঠানো টাকা তারা পেয়েছেন কি না এবং ক্যাশ আউট করেছেন কি না। যদি বলে পেয়েছেন কিন্তু টাকা তোলেনি বা ক্যাশ আউট করেনি, তখন প্রতারকেরা তাদের প্রতারণার বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার শুরু করে। প্রতারণার ছলে তারা বলতে থাকে, ‘আমার দোকান থেকে একই সময়ে কয়েকটি নম্বরে পাঠানো টাকা নিয়ে অভিযোগ আসায় তাদের নম্বর লক করতে গিয়ে আপনার নম্বরও লক হয়ে গেছে। আপনাকে বিকাশ অফিস হতে ফোন করে আনলক করে দেবে।’

ডিবির কর্মকর্তা আহাদ বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই তৃতীয় গ্রুপ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে, অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বিকাশ অফিসের নম্বর ক্লোন করে ফোন দেয়। ফোন করে বিভিন্ন কথার ছলে ওটিপি এবং বিকাশ পিন কোড নিয়ে নেয়। পরে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারক চক্র অ্যাকাউন্ট আনলক করার কথা বলে ভিকটিমের বিকাশ অ্যাকাউন্ট এবং প্রতারক চক্রের বিকাশ অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা পাঠাতে বলে। এরপর হাতিয়ে নেওয়া টাকা মাঠপর্যায়ে থাকা সর্বশেষ অর্থাৎ চতুর্থ গ্রুপের কাছে পাঠানো হয়। যারা বিভিন্ন হাত বদল করে ক্যাশ আউট করে, ফলে প্রতারকদের অবস্থান শনাক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

মোহাম্মদপুর থানায় থানায় দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে প্রতারক চক্রের তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপকমিশনার মো. আ. আহাদ।