প্রতীক্ষা শেষে বইমেলার উদ্বোধন

উদ্বোধনের পর আজ অমর একুশে বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে দর্শনার্থীরা
ছবি: সাইফুল ইসলাম

দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও টানাপোড়েনের পর অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হলো ৩৭তম অমর একুশে বইমেলার। আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বইমেলা চলবে।

আজ বিকেল চারটার দিকে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এবারের মেলা উৎসর্গ করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে। মেলার মূল ভাবনা ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ভাষা শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর অমর একুশে বইমেলা ভার্চ্যুয়াল বা অনলাইনে করার কথা উঠেছিল। তবে শেষে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি চত্বরে মেলা আয়োজনের অনুমতি পায় বাংলা একাডেমি।

প্রবেশ পথে চলছে পুলিশের নিরাপত্তা তল্লাশি। আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর পর্যবেক্ষণের জন্য সময় নেওয়ায় মেলা দেরিতে শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার কারণে এবার নির্ধারিত সময়ের পর বইমেলা অনুষ্ঠিত হলো। কিন্তু মার্চ মাসও আমাদের জাতির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৭ মার্চের ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়েই মেলা হচ্ছে।’

সবাইকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মের বই পড়ার প্রতি ঝোঁক সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য ছোটবেলা থেকে তাদের বই পড়ায় আগ্রহী করতে হবে।

মেলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেকে সুরক্ষিত করা মানে অন্যকেও সুরক্ষিত করা।’

স্টল সাজানোর কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
ছবি: প্রথম আলো

ভার্চ্যুয়ালি মেলার উদ্বোধনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটির ইংরেজি অনুবাদ ‘নিউ চায়না-১৯৫২’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলা একাডেমি বইটি প্রকাশ করেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেলা মঞ্চে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংস্কৃতিসচিব মো. বদরুল আরেফীন, স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদও।

বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের দক্ষিণের মাঠে আগের মতো এবারও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ করা হয়। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার কার্যক্রমও এখানে চলবে।

১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা যখন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন, তখন তিনি বাংলা একাডেমিতে প্রথম অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্যোগ নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বইমেলা করা সম্ভব হয়নি। ১৯৮৪ সালে সাড়ম্বরে বর্তমানের অমর একুশে গ্রন্থমেলার সূচনা হয়।